অমৃতসরে স্বর্ণমন্দিরের বাইরে সুখবীর সিংহ বাদল। ছবি: সংগৃহীত।
‘ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’-এর জন্য দোষী সাব্যস্ত করে ‘সাজা’ দিয়েছিল শিখ ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান অকাল তখ্ত। সেই ‘সাজা’ পালন করতে ভাঙা পায়ে হুইলচেয়ারে চেপে মঙ্গলবার সকালে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে পৌঁছে গেলেন শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদল। স্বর্ণমন্দিরের সামনে হুইল চেয়ারে বসা সুখবীরের একটি ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, অকালি নেতার গলায় ঝোলানো রয়েছে প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা রয়েছে তাঁর ‘কুকর্ম’। হাতে রয়েছে বর্শা। অকাল তখ্ত সুখবীরকে ‘সেবাদার’ হয়ে গুরুদ্বারের রান্নাঘর এবং শৌচালয় পরিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছিল। মঙ্গলবার স্বর্ণমন্দিরের ভিতরে ঠিক কী কাজ তিনি করেছেন, তা এখনও জানা যায়নি।
সুখবীরের আত্মীয় তথা অকালি দলের প্রবীণ নেতা বিক্রম সিংহ মাজিতিয়াকেও ‘সাজা’ দিয়েছে অকাল তখ্ত। সেই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার সকালে স্বর্ণমন্দিরে বাসন মেজেছেন তিনি। অকালি দলের নেতা সুচা সিংহ লনগাহ্, হিরা সিংহ গাব্রিয়া, বলবিন্দর সিংহ ভুন্দর, দলজিৎ সিংহ চিমাকে মঙ্গলবার দুপুরে শৌচালয় সাফাইয়ের ‘সাজা’ দিয়েছে অকাল তখ্ত। তার পর স্নান করে রান্নাঘরে বাসন মাজার কথা রয়েছে তাঁদের। স্বর্ণমন্দির সূত্রের খবর, অকালি নেতারা কাজের ফাঁকে এক ঘণ্টা কীর্তনও শুনেছেন।
সুখবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ২০১৫ সালে পঞ্জাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রামরহিমকে ‘সুবিধা’ দিয়েছিলেন। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য অকাল তখ্তের জাঠেদার জ্ঞানী রঘুবীর সিংহের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ‘বিচারসভা’ বসে। সোমবার সেখানে গুরমিতকে সাহায্য করার জন্য সুখবীরকে ‘তঙ্খাইয়া’ (ধর্ম অবমাননাকারী) ঘোষণা করেন। তার পরে সুখবীর-সহ অকালি নেতাদের গুরুদ্বারে শৌচালয়, রান্নাঘর সাফাই করার ‘সাজা’ ঘোষণা করা হয়। ২০১২-১৭ পঞ্জাবে অকালি দল-বিজেপি জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন সুখবীর ওই কাজ করেন বলে অভিযোগ। সে সময় পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তাঁর পিতা, প্রয়াত প্রকাশ সিংহ বাদল। অতীতে ধর্ম অবমাননার অপরাধে প্রকাশকেও শাস্তি দিয়েছিল অকাল তখ্ত। সুখবীর নিজের দোষ স্বীকার করে অকাল তখ্তের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। তার পরেই মঙ্গলবার হাজির হয়েছেন অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে।