অজিত পওয়ার (ডান দিকে) বাদ পড়লেন এনসিপির পোস্টার থেকে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সভাপতি শরদ পওয়ার রয়েছেন। রয়েছেন, দলের দুই সদ্য নিযুক্ত কার্যনির্বাহী সভাপতি সুপ্রিয়া সুলে এবং প্রফুল পটেল। কিন্তু অনুপস্থিত অজিত পওয়ার। দিল্লিতে এনসিপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পোস্টারে তাঁর ছবি না-থাকা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। গত কয়েক মাস ধরেই গুঞ্জন চলছে, এনসিপির একাধিক বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে চলেছেন তিনি। বুধবারের ঘটনায় সেই জল্পনা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
অজিত সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে এনসিপির সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মনে করা হচ্ছিল, তাঁকে দলের মহারাষ্ট্র শাখার সভাপতি করা হতে পারে। কিন্তু তা আপাতত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। অজিতের ‘ইচ্ছা’ প্রসঙ্গে শরদ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। দলের নির্দিষ্ট কমিটিতে এ নিয়ে আলোচনা হবে।’’
গত এপ্রিলে কর্নাটকের বিধানসভা ভোটে এনসিপির ১৫ জনের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন অজিত। সে সময়ই শরদ-কন্যা সুপ্রিয়ার সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য রয়েছে বলে দলের একটি সূত্রে খবর মিলেছিল। ঠিক এক বছর আগে, ২০২২-এর জুন মাসে একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহের জেরে শিবসেনায় ভাঙন এবং উদ্ধব ঠাকরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব হাতছাড়া হওয়ার পরে মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আঘাডী’র বৃহত্তম দল হয়েছে এনসিপি। দলের পরিষদীয় নেতা হিসেবে গত জুলাই মাসে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন অজিত। তার আগে উদ্ধব সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের পরেও অজিত ‘বিদ্রোহী’ হয়েছিলেন। তাঁর সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। অজিত হন উপমুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এনসিপি পরিষদীয় দলে ভাঙন ধরাতে ব্যর্থ হয়ে ইস্তফা দিতে হয় তাঁদের দু’জনকে। এর পর অজিত আবার শরদের শিবিরে আশ্রয় নেন। তাঁকে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘাডী জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন শরদ।
মহারাষ্ট্রে এখন শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে আসা শিন্ডের গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপির জোট সরকার চলছে। কিন্তু দলত্যাগ-বিরোধী আইনে শিন্ডে এবং তাঁর বিধায়কদের বিধায়ক পদ খারিজ করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। সম্ভাব্য সেই পরিস্থিতিতে শিন্ডের পরিবর্তে অজিতের সঙ্গে হাত মেলানোর ‘বিকল্প পরিকল্পনা’ বিজেপি তৈরি করেছে বলে মরাঠা রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন। অন্য দিকে, লোকসভা ভোটের আগে অজিত দল ছাড়লে এনসিপি সঙ্কটে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।