দিল্লিতে দূষণ। ছবি: পিটিআই।
দিওয়ালি আসা মানেই আতঙ্কে থাকে দিল্লি। উদ্বেগে থাকেন পরিবেশবিদরা। ফের কি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হবে রাজধানী?
দিওয়ালির বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই রাজধানীতে এ বার বাজি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। কিছুটা ফল মিলেছে। গত দিওয়ালির তুলনায় এ বার দূষণের মাত্রা বেশ খানিকটা কমেছে। কিন্তু তাতেও অবস্থা ভাল বলা যাবে না। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের রিপোর্ট বলছে, দিওয়ালির দিন রাজধানীর এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছিল ৩১৯। শুক্রবার সকালে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪২-৩৫৫। এই মাত্রা দূষণের তালিকায় ‘বেশ খারাপ’ অবস্থার শ্রেণিতে পড়ে। গত বছর দিওয়ালির পর একিউআই-এর মাত্রা উঠেছিল ৪৪৫-এ, যা পড়ে দূষণের ‘সিভিয়ার’ বা ‘গুরুতর’ শ্রেণিতে।
আরও পড়ুন: আপনি কি পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করছেন? সতর্ক হোন
সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরে শব্দকেও কিছুটা জব্দ করা গিয়েছে বলে মানছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শব্দদানবের তাণ্ডব যে একেবারে ছিল না সেটা তা নয়। দিল্লির বেশ কয়েকটি জায়গায় গত রাতের পর থেকে বাতাসের পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। যেমন দক্ষিণ দিল্লির আরকে পুরমে একিউআই-এর মাত্রা ছিল ৯৭৮। ভয়াবহ অবস্থা বলা যায়। উল্টো দিকে পঞ্জাবি বাগে ছিল ২৪৩। লোধি রোডে দূষণের মাত্রা ছিল ৩৮৩। আনন্দবিহার এমনিতে সবচেয়ে দূষিত এলাকা। গত বছরে এখানে দূষণের মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তবে রিপোর্ট বলছে, এ বার সেখানে এই মাত্রা ৪০৫।
একিউআই যদি ০-৫০ হয় তা হলে সেটাকে চিহ্নিত করা হয় ‘ভাল’ হিসাবে। ৫১-১০০ হলে ‘সন্তোষজনক’। ১০১-২০০ হলে ‘মাঝারি’, ২০১-৩০০ হলে ‘খারাপ’, ৩০১-৪০০ হলে ‘খুব খারাপ’ এবং ৪০১ ও তার উপরে একিউআই হলে ‘গুরুতর’।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে কমলো শব্দবাজির প্রকোপ
পরিবেশবিদরা একই সঙ্গে জানিয়েছেন, দিল্লির পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় ভাল শুধু কম বাজি পোড়ানোর জন্যই নয়। এ বার হাওয়ার গতি পঞ্জাব ও হরিয়ানায় ফসল পোড়ানো থেকে উত্পন্ন ধোঁয়াকে দিল্লিকে ঢুকতে বাধা দিয়েছে। এটাও দূষণ তুলনামূলক কম হওয়ার একটা কারণ।
দিল্লির রাজ্য দূষণ বোর্ডের তথ্য বলছে, পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) ২.৫-এর মাত্রা পিএম ১০-এর তুলনায় অনেক বেড়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়া গেটের মতো জায়গায় সাধারণত সকাল ৬টায় পিএম ২.৫-এর মাত্রা থাকে ৬০ মাইক্রন। এ দিন তা ছিল ১৫ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১১ মাইক্রনে। এই পিএম ২.৫ এতই সুক্ষ্ম যে খুব সহজে এটি ফুসফুসে ঢুকে পড়ে এবং এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের বড় কারণ।