প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
অর্থনীতি, নিরাপত্তা, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মস্কোর বড় বন্ধু ইসলামাবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা যাত্রা নিয়ে যখন দ্বিপাক্ষিক উন্মাদনার ঢল নেমেছে, তখন মোদী সরকারকে এ ভাবেই সূক্ষ্ম বার্তা দিল রাশিয়া।
কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ব দ্বিধাবিভক্ত, আমেরিকার সঙ্গে যুযুধান রাশিয়া। এই সময়ে মোদীর ওয়াশিংটন সফরকে নিয়ে নয়াদিল্লির ঢাক পেটানোর বিষয়টিকে আদৌ ভাল চোখে দেখছে না মস্কো। সে কারণেই ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে থাকা পাকিস্তানকে কিছুটা পিঠ চাপড়ানোর এই পদক্ষেপ পুতিন সরকারের।
রাশিয়া এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি সম্মেলনকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, “আমরা দু’দেশ অর্থনীতি, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেব। নতুন নতুন ক্ষেত্রে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “রাশিয়া যে ভাবে বিশ্বব্যবস্থাকে দেখে এবং তাদের নৈতিকতার যে ঐতিহ্য, তা মহম্মদ আলি জিন্নার বিশ্বাস ও দর্শনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।”
আমেরিকার সঙ্গে যখনই ঘনিষ্ঠতার বার্তা দিয়েছে ভারত, রাশিয়ার দিক থেকে পাকিস্তানকে কাজে লাগানো হয়েছে নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক বার্তা দেওয়ার জন্য। যা নিয়ে ভারত প্রকাশ্যে কখনই মুখ খোলেনি। বরং বিষয়টিকে কিছুটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে ভারত আমেরিকার সঙ্গে লজিস্টিক বিনিময় সংক্রান্ত অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিপত্র সই করার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়া পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি সই করে। ভারত বারবার এই নিয়ে আন্তর্জাতিক শিবিরে সতর্কবার্তা দিয়েছে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, অস্ত্র বা পুঁজি দিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পোক্ত করার অর্থ, তা ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্তে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু এই সতর্কতা সত্ত্বেও ২০২১ পর্যন্ত রাশিয়া পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক মহড়া দিয়ে গিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভারত ভারসাম্যের কূটনীতির মাধ্যমে কার্যত মস্কোর পাশেই থেকেছে বলেই কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের বক্তব্য। বিনিময়ে সস্তায় অশোধিত তেল বিপুল পরিমাণে আমদানি করা হয়েছে রাশিয়া থেকে। রাশিয়াও অনেক দিন পাকিস্তান নিয়ে ঘনিষ্ঠতার বার্তা দেয়নি। কিন্তু মোদীর ওয়াশিংটন সফরের আগে ফের ইসলামাবাদের তাস খেলতে দেখা যাচ্ছে মস্কোকে।