ক্রিশ্চিয়ান মিশেল জেমস। ছবি: পিটিআই।
অগুস্তা-কাণ্ডে ঘুষ লেনদেনে অভিযুক্ত দালাল ক্রিশ্চিয়ান মিশেল জেমসকে পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার দুপুরে তাঁকে দিল্লির পাটিয়ালা হাউস আদালতে তোলা হয়। এ দিন বিকেলে ওই নির্দেশে দেয় আদালত। এই মামলায় জেমসের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবারই তাঁকে দুবাই থেকে প্রত্যর্পণ করে ভারতে আনা হয়। এর পর সারা রাত ধরে জেমসকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। ঘটনাচক্রে, এই মুহূর্তে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সফর করছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। জেমসের প্রত্যর্পণের বিষয়টিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মোদী সরকারের জয় বলেই দাবি করছে বিজেপি। এতে কংগ্রেসের সনিয়া গাঁধীর নাম জড়াতে পারে বলে আগেই শোনা যাচ্ছিল। যদিও জোমসের আইইজীবীর দাবি ছিল, সনিয়া গাঁধীর নাম জড়াতে তাঁর মক্কেলের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ নাগরিক জেমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৩,৬০০ কোটির অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড চপার চুক্তিতে ওই সংস্থার হয়ে ঘুষের লেনদেন করেছিলেন। এবং ইডি-র অভিযোগ, সে কাজ করতে ২২৫ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন জেমস। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে দুবাইতে গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকে দুবাইয়ের জেলেই ছিলেন তিনি।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
দুবাই থেকে জেমসকে ভারতে আনতে পর হয় কেন্দ্র। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছে জেমসকে ভারতে প্রত্যর্পণের আর্জি জানানো হয়। তার বিরোধিতা করলেও গত মাসে জেমসের যুক্তি খারিজ করে দিয়েছিল সেখানকার শীর্ষ আদালত। এর পর তাঁকে ভারতে পাঠাতে সরকারি আদেশ জারি করে দুবাই।
আরও পড়ুন: ‘সব টাকা ফেরত দেব, দয়া করে নিন’, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাঙ্ক আর সরকারকে আবেদন মাল্য-র
নয়াদিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতরের পথে ক্রিশ্চিয়ান মিশেল জেমস। ছবি: পিটিআই।
সিবিআইয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, দুবাই থেকে প্রত্যর্পণের পর মঙ্গলবার রাতে সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি বিশেষ বিমানে করে তাঁকে ভারতে আনা হয়। এর পর তাঁকে সিবিআইয়ের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সিবিআই আধিকারিকেরা সেখানে জেমসকে সারা রাত ধরে জেরা করেন। এ দিন তাঁকে দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হবে। দুবাই থেকে জেমসের প্রত্যর্পণের বিষয়টির ‘সমন্বয় সাধন’ করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। এ কাজে অজিত ডোভালের সহযোগিতায় সিবিআইয়ের একটি দল, ‘র’-এর আধিকারিকেরা এবং বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকেরাও ছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘এ বার কার বাবার পালা?’ গো-রক্ষকদের হাতে পুলিশ অফিসারের মৃত্যুতে ছেলের প্রশ্ন
ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিভিআইপিদের জন্য ১২টি বিলাসহুল চপার কিনতে ২০১০ সালে ব্রিটিশ সংস্থা অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করেছিল তত্কালীন ইউপিএ সরকার। ৩,৬০০ কোটি টাকার ওই চুক্তি করতে বিপুল অঙ্কের ঘুষের লেনদেন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশ্যে আসে ২০১৩-তে। এতে প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এস পি ত্যাগীর নাম জড়িয়ে যায়। পরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। তদন্তে উঠে আসে জেমস-সহ তিন জন দালালের নাম। প্রবল বিতর্কের মুখে পড়ে ২০১৪-তে ওই চুক্তি বাতিল করে মনমোহন সরকার।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)