অগ্নিপথ-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বিহারে। ছবি: পিটিআই।
অগ্নিপথ প্রকল্পের নিয়মে কেন্দ্রের ছাড় ঘোষণার পরেও বিক্ষোভের আঁচ বিন্দুমাত্র কমেনি গোটা দেশে। অগ্নিপথ নিয়ে বিক্ষোভের চতুর্থ দিনেও আগুন জ্বলল বিহারে। কোথাও ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথাও স্টেশন এবং থানায় ভাঙচুর, পুলিশের উপর হামলা, কোথাও বিক্ষোভ থামাতে পুলিশের লাঠিচার্জ, ধরপাকড়— শনিবার সকালে থেকেই বিহারের ছবিটা ঠিক এ রকমই। দফায় দফায় অশান্ত হয়ে উঠতে দেখা গেল পটনা, ছপরা, মুঙ্গের, জেহানাবাদ-সহ একাধিক জায়গা।
অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় শনিবার বন্ধের মধ্যেই অশান্ত হয়ে ওঠে পটনার মসৌউঢ়ী। সেখানে রেলপুলিশের থানায় হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, পটনা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে তারেগনা স্টেশনে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, ভাঙচুর চালানো হয় এবং রেলের সম্পত্তি নষ্ট করা হয়।
মুঙ্গেরের একাধিক জায়গায় দফায় দফায় পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। অন্য দিকে, জেহানাবাদেও বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। মসৌউঢ়ীতে একটি কোচিং সেন্টার থেকে ছাত্ররা স্টেশনে জড়ো হয়ে স্টেশন মাস্টারের কেবিন, টিকিট কাউন্টারে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে শূন্যে ১০-১৫ রাউন্ড গুলি চালাতে হয়।
বক্সারের নবাবনগরে ১২০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। বিক্ষোভকারীদের হামলায় বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যে ভাবে অগ্নিপথ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে বিহারের বিভিন্ন জেলায়, প্রতিরোধে ১৫টি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অওরঙ্গাবাদ থানাতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই-ই নয়, বেশ কয়েকটি বাসে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিডিও অফিসে পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভকারীরা যে ভাবে তাণ্ডব চালাচ্ছে বিহার জুড়ে তা নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি। আর এই পরিস্থিতির জন্য পুলিশকেই দায়ী করছে তারা। বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ ব্যর্থ বলেও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। যদিও রাজ্য পুলিশের ডিজি এস কে সিঙ্ঘল দাবি করেছেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তা একটা ‘ধারণা’ মাত্র।