রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি যোগী রাজ্যের হাপুরে শিশুকন্যা ধর্ষণের পরে গত কাল সামনে এসেছিল লখিমপুর থেরিতে গণধর্ষণের পরে এক কিশোরীকে শ্বাসরুদ্ধ করে খুনের বিষয়টি। মৃতের বাবার অভিযোগ, চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল তাঁর মেয়ের। কেটে নেওয়া হয়েছিল জিভও। ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফের নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ! এ বার স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গড় গোরক্ষপুরের ঘটনা।
অভিযোগ, শুক্রবার ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। পর দিন মেয়েকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন বাবা-মা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, পকসো-সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে।
নির্যাতিতার মা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে জল আনতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় মেয়েটি। পর দিন ভোর ৫টা নাগাদ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন অভিভাবকেরা। নির্যাতিতা মাকে জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা অপহরণ করে রাতভর ধর্ষণ করে তাকে। তার পরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠায় রবিবার রাতেই গোরক্ষপুরের পুলিশ প্রধান সুনীল গুপ্তকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরানো হয়েছে আরও ছ’জেলার পুলিশ প্রধানকে।
আজমগড়ের এক প্রত্যন্ত গ্রামেও আজ পুকুর থেকে ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, ওই কিশোরীকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।
খেরির ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় আজ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ছ’সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করে মুখ্যসচিব এবং ডিজিপি-কে নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি অন্য একটি মামলায় নোটিস পাঠানো হয়েছে কানপুর পুলিশের এক ইনস্পেক্টরকেও। যৌন হেনস্থার অভিযোগ করতে গিয়ে ওই ইনস্পেক্টরের কুপ্রস্তাবের শিকার হয়েছিলেন ১৬ এক কিশোরী।
একের পর এক ধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের ঘটনায় ফের রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব বিরোধীরা। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা ফেসবুকে জানিয়েছেন, বুলন্দশহর, হাপুর, লখিমপুর খেরির পরে এ বার গোরক্ষপুর। মহিলাদের সম্ভ্রমহানির এই লাগাতার ঘটনাই তুলে ধরেছে, সরকার মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, আইনের প্রতি কোনও ভীতি নেই অপরাধীদের। তার জেরেই মহিলাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ভয়ানক ঘটনা ঘটেই চলেছে। সরকারের উচিত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মহিলাদের নিরাপত্তায় উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।
রাজ্যে একের পর এক খুন, ধর্ষণে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাহুল গাঁধীও। গত সপ্তাহে আজমগড়ের বাসগাঁও গ্রামের প্রধান সত্যমেবকে (৪২) গুলি করে হত্যার ঘটনায় আজ রাহুলের টুইট, ‘‘উত্তরপ্রদেশে হিংসা এবং ধর্ষণের জঙ্গলরাজ চরমসীমায় পৌঁছেছে। এ বার আরও এক ভয়ানক ঘটনা— সরপঞ্চ সত্যমেব দলিত হয়েও ‘না’ বলার কারণে ওঁকে খুন করা হল। ’’ সত্যমেব খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে জনসুরক্ষা আইনে মামলা রুজু হয়েছে।