আরও তিন রাজ্যের ট্যাবলো বাতিল। —ফাইল চিত্র।
প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে ট্যাবলো বাছাই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। বাংলা ছাড়াও এ বার অনুষ্ঠান থেকে বাদ গেল মহারাষ্ট্র, বিহার এবং কেরলের ট্যাবলোও। তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।
শুক্রবার সকালে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন কেরলের আইনমন্ত্রী একে বালন। তিনি বলেন, ‘‘কেরলের ট্যাবলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার বিরোধী এমন সরকার আগে কেউ, কখনও দেখেছে?’’
মহারাষ্ট্রের ট্যাবলো বাদ দেওয়ায়, এর আগে কেন্দ্রের সমালোচনায় সরব হন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবস গোটা দেশের উৎসব। তাতে প্রত্যেক রাজ্যকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। কিন্তু এই সরকার পক্ষপাতিত্ব করছে। বিরোধীদের দখলে থাকা রাজ্যগুলির সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে।’’
সুপ্রিয়া সুলের টুইট।
একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রকে এক হাত নেন শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতও। তিনি বলেন, ‘‘ট্যাবলো কেন বাদ দেওয়া হল, সরকারকে তার কৈফিয়ত দিতেই হবে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীরও উচিত বিষয়টি তদারকি করে দেখা। কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা জানতে হবে।’’
জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি), ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-র বিরুদ্ধে সুর চড়ানোতেই বাংলা, মহারাষ্ট্র, কেরলের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির ট্যাবলো বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মত রাজনীতিকদের একাংশের। তবে বিহারে নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর সঙ্গে জোট সরকার রয়েছে বিজেপির। সে রাজ্যের ট্যাবলো বাদ দেওয়া নিয়ে একাধিক জল্পনা উঠে আসছে।
রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের দাবি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্যেই লাগাতার জোট বিরোধী মন্তব্য করে যাচ্ছেন জেডিইউ নেতা তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, খাতায় কলমে যিনি দলের দু’নম্বর ব্যক্তি। এনআরসি, এনপিআর এবং সিএএ-র বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন তিনি। তাতেই দুই দলের বিরুদ্ধে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে নীতীশ কোনও পদক্ষেপ না করাতেই আরও চটেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই তাঁর ‘জল-জীবন-হরিয়ালি অভিযান’-এই তিনটি বিষয়ের উপর ট্যাবলো পাঠানো প্রস্তাব খারিজ করা হয়। যদিও এ নিয়ে বিহার সরকার বা বিজেপির তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
দিল্লির রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের যে অনুষ্ঠান সূচি প্রকাশ করেছে কেন্দ্র, তাতে ২২টি ট্যাবলোর কথা উল্লেখ রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, গুজরাত, হিমাচলপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, মেঘালয়, ওডিশা, পঞ্জাব, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ—এই ১৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ট্যাবলো থাকবে সেখানে। এ ছাড়াও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, অর্থনৈতিক পরিষেবা সহ কেন্দ্রের মোট ৬টি বিভাগের ট্যাবলো থাকবে।