ফাইল চিত্র।
উত্তর পূর্বের তিন রাজ্যে সরকার গঠনের জন্য বিজেপির তৎপরতা এখন তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতেই দিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেসে অতিরিক্ত বাতানুকূল কামরা জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে শুরু হয়েছে জল্পনা। মাত্র ছ’দিনের জন্য রাজধানী এক্সপ্রেসে এই বাড়তি কামরা দেওয়ার সিদ্ধান্তে রাজনীতির যোগ খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীরা।
গত শনিবার উত্তর পূর্বের তিন রাজ্য ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ের ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে। ত্রিপুরায় বিজেপি ও সহযোগী দলগুলির ঝুলিতে ৪৩টি আসন। বামেরা পেয়েছে ১৬টি। নাগাল্যান্ডে এনপিএফ সব থেকে বড় দল হয়েও বিজেপির জোট শরিক এনডিপিপিই ক্ষমতা দখল করছে। মেঘালয়ে ২ টি আসন পেলেও বিজেপিই মূল চালিকা শক্তি। তাদের সহযোগী দলই ক্ষমতায় আসছে। তাই তিন রাজ্যেই সক্রিয় বিজেপির রাজনৈতিক ম্যানেজাররা। এছাড়াও রয়েছেন বহু মাঝারি মাপের নেতা। কিন্তু তাঁদের সবাইকে বিমানে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তা ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকেও আসছেন দলের নেতা-কর্মীরা। তাঁদেরও ট্রেনে নিয়ে যাওয়াই সহজ বলে মানছেন বিজেপি নেতারাও।
নয়াদিল্লি ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস গুয়াহাটি এবং নাগাল্যান্ডের রাজধানী ডিমাপুর হয়ে ডিব্রুগর পৌঁছয়। ফলে এই ট্রেনে করে গেলে নাগাল্যান্ড তো বটেই, মেঘালয়ের রাজধানী শিলং এবং ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলাতেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছনো সম্ভব। তাই বিজেপির নেতা কর্মীদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতেই রয়েছে এই ট্রেনটি।
আর এখনই উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেসে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে অতিরিক্ত কোচ থাকবে। অন্য দিকে ডিব্রুগড়-নয়াদিল্লি রাজধানীতে আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত অতিরিক্ত কোচ থাকবে। তবে রেলকর্তাদের কেউ দাবি করেছেন, হোলির মরসুমে টিকিটের চাহিদা রয়েছে।
আবার কেউ বলছেন, ‘গ্রীষ্মকালীন’ পরিষেবা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। সে ক্ষেত্রে হোলি মিটে যাওয়ার পরে কেন ‘হোলি স্পেশাল’ আর কেনই বা গ্রীষ্ম শুরুর আগে সাত দিনের ‘গ্রীষ্ম স্পেশাল’ তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘সিদ্ধান্ত তো দিল্লিতে নেওয়া হয়, আমরা শুধু পালন করি।’’
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘হোলির জন্য রাজধানীতে, অতিরিক্ত কামরা দেওয়া হয় এমন কথা জীবনে শুনিনি। দিল্লি সহ উত্তর ভারত থেকে হাজার হাজার লোক নিয়ে গিয়ে বিজেপি তিন রাজ্যে ভোট করিয়েছে। মেঘালয়, নাগাল্যান্ডে হাতে গোনা আসন নিয়ে সরকার গড়তেও এ বার বাইরে থেকে বাহুবলীরা আসছে। তাদের আনা নেওয়া করতেই রেলের মতো রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করছে বিজেপি।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দার্জিলিংঙের সাংসদ সুরিন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার জবাব,‘‘আকাশে মেঘ করলেও তাঁরা রাজনীতির সমীকরণ খুঁজে পান। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’