নিজস্ব চিত্র
আশি ছুঁইছুঁই ভাণ্ডারী দাস ভারতে রয়েছেন ১৯৬৭ সাল থেকে। এটা মেনে নিয়েছে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল৷ ১৯৭১ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন, তাতেও কোনও সন্দেহ নেই সদস্য-বিচারক বি কে তালুকদারের৷ এর পরও কাছাড় জেলার বড়খলার ভাণ্ডারী দাস ভারতীয় হয়ে উঠতে পারেননি৷ নাগরিকত্বের জন্য এখন আবেদন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে৷
রায়ে সদস্য-বিচারক বি কে তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯৭১-র ২৫ মার্চের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তারা বিদেশি৷ অবৈধ ভাবে এ দেশে আসার জন্য তাদের শাস্তিভোগ করতে হয়৷ শাস্তিশেষে তাদের বিতাড়িত করা হয়৷ ১৯৬৬ ও ১৯৭১-র মধ্যে যাঁরা এসেছেন, তারাও বিদেশিই, তবে তাঁদের শাস্তি বা বিতাড়নের আশঙ্কা নেই৷ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানোর সুযোগ দেওয়া হয় তাঁদের৷ মঞ্জুর হলে আবেদন জানানোর দশ বছর পরে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়৷
ভাণ্ডারী গত পাঁচ দশক নিরাপদেই কাটান৷ স্বামী-সন্তানদের নিয়ে সুখেই ছিলেন৷ তিনি ভারতীয় কি না কোনও দিন মনে প্রশ্ন জাগেনি৷ ২০১৮ সালে আচমকা এক দিন বাড়িতে নোটিস আসে৷ পুলিশ তাঁকে বিদেশি বলে সন্দেহ করছে৷ তাঁকে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে গিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে৷
তখনও এমন রায়ের আশঙ্কা করেননি ভাণ্ডারী বা তাঁর সন্তানেরা৷ কারণ এর কিছু দিন আগেই এনআরসি-র জন্য সমস্ত নথি জমা করেছিলেন৷ ১৯৬৭ সালে স্বামী, দেবরদের সঙ্গে এ দেশে এসেছেন তিনি৷ ভারত সরকার শরণার্থী হিসাবে মেনে নিয়ে শংসাপত্র দিয়েছে৷ ওই নথি দেখেই এনআরসি-তে নাম ওঠে তাঁর৷
বিচারক-সদস্য রায়ে বলেন, ‘‘নথিপত্র নিয়ে সংশয় নেই৷ কিন্তু অসমে বসবাসকারীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে ১৯৬৬-র আগের নথি প্রয়োজন৷’’ নইলে ১৯৭১-র আগে এলেও নাগরিকত্বের আবেদন জানিয়ে দশ বছর অপেক্ষা করতে হবে৷ ভাণ্ডারী দাস বলেন, ‘‘দশ বছর বাঁচব কি না কে জানে! তবু আবেদন তো জানাতেই হবে!’’