ছবি: সংগৃহীত
মুকুল ওয়াসনিক না কি মল্লিকার্জুন খড়্গে? অশোক গহলৌত না কি ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ? গুলাম নবি আজাদ বা আহমেদ পটেল? সুশীলকুমার শিন্দে বা মীরা কুমার? না কি শশী তারুরের মতো কেউ?
গাঁধী পরিবারের বাইরে কে কংগ্রেস সভাপতি পদে বসতে পারেন?
দিল্লির প্রবীণ কংগ্রেস নেতার চটজলদি উত্তর, “রাহুল গাঁধীকেই দায়িত্ব নিতে হবে।” গাঁধী পরিবারের বাইরের কে হতে পারেন? এ বার অনেক ক্ষণ ভেবে বললেন, “যোগ্যতা অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাই রাহুলকেই চাইবেন।”
গাঁধী পরিবারের বাইরের কারও কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে প্রিয়ঙ্কার পুরনো মন্তব্য সামনে আসার পরে, বুধবার দিনভর কংগ্রেসের অন্দরে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেল। গাঁধী পরিবারের বাইরে কে সভাপতি হতে পারেন? দেখা গেল, লোকসভা নির্বাচনের পরে রাহুল পদত্যাগ করার পরে যে নামগুলি উঠে এসেছিল, সেগুলিই ফের ঘুরপাক খাচ্ছে।
রাহুল দায়িত্ব ছাড়ার পরে নবীনে-প্রবীণে সমন্বয় রাখতে মুকুল ওয়াসনিকের নাম নিয়ে জোর আলোচনা হয়েছিল। বছর ষাটের ওয়াসনিক দলিত নেতা। সংগঠনের ভার সামলেছেন। কংগ্রেসের অনেকেই মনে করছেন, গাঁধীরা অনড় থাকলে ফের ওয়াসনিকের নাম উঠতে পারে।
রাহুল দায়িত্ব ছাড়ার পরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সচিন পাইলটের নামও আলোচনায় উঠেছিল। এখন আবার কর্নাটকের লড়াকু নেতা ডি কে শিবকুমারের নামও আলোচনায় উঠছে।
স্বাধীন ভারতে ইউ এন ধেবর, সীতারাম কেশরীর মতো নেতারা যেমন স্বল্প সময়ের জন্য কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন, তেমনই কে কামরাজ, পি ভি নরসিংহ রাওয়ের মতো নেতারাও দীর্ঘ সময় দাপটে দল চালিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের মতে, এখন দলের সঙ্কটে এমন কাউকে দরকার, উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারত, কংগ্রেসের অন্দরে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা ও পরিচিতি রয়েছে। গাঁধী পরিবারের বাইরের হলে তাঁকে সংগঠনের নিচুতলা থেকে উঠে আসা নেতা হতে হবে। গাঁধী পরিবারের আস্থাভাজন হওয়াও জরুরি।
এআইসিসি-র এক নেতার মন্তব্য, “রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী পরিবারের বাইরের কারও সভাপতি হওয়া উচিত বললেও, তাঁদের অনুগত ও আস্থাভাজন ছাড়া কেউ সভাপতি পদে বসলে তাঁরা স্বস্তি পাবেন না।” এই মাপকাঠিতে পি চিদম্বরমের মতো অনেকেই পিছিয়ে পড়বেন। এগিয়ে থাকবেন খড়্গে-শিন্দের মতো প্রবীণরা। যাঁরা গাঁধী পরিবারের কথা মতোই চলবেন।
অতীতে সংগঠনের ভার সামলানো কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “বর্তমান কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে গহলৌত, ক্যাপ্টেনরা স্বচ্ছন্দে সভাপতি হতে পারেন। কিন্তু ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল ছাড়া সকলেই প্রবীণ।” তারুর বলিয়ে-কইয়ে বটে। কিন্তু কংগ্রেসের নেতাদের মতে, তিনি পুরনো কংগ্রেসি নন। পুরোপুরি কংগ্রেসের মতাদর্শেরও প্রতিনিধিত্ব করেন না।
গুজরাতের শক্তিসিন গোহিলের যুক্তি, “শিক্ষিত, পড়াশোনা করা, নৈতিক ভাবে সৎ, যা ভাবেন, সেটাই বলেন— এমন সভাপতি দরকার। তাঁকে দূরদর্শীও হতে হবে। এই সব মাপকাঠিতে রাহুল গাঁধী নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন।”