আবারও কি সম্মুখসমরে পাইলট আর গহলৌত? ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান সরকারের বিরুদ্ধে এক প্রকার ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছেন দলেরই নেতা শচীন পাইলট। মঙ্গলবারই দুর্নীতি প্রসঙ্গে রাজস্থান সরকারের নীরবতা নিয়ে সরব হয়ে প্রতীকী অনশনে বসেছিলেন তিনি। এই আবহেই বুধবার সাতসকালে পাইলটের বিমান দিল্লি পৌঁছল। সূত্রের খবর, রাজধানীতে দলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে তাঁর। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠ এই যুবনেতার মানভঞ্জনের চেষ্টা করা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে হাত শিবিরের তরফে এখনও পর্যন্ত এই বৈঠক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি। আবার এই ধরনের বৈঠকের কথা উড়িয়েও দেওয়া হয়নি। দল এবং রাজস্থান সরকারের কাজে ‘অসন্তুষ্ট’ পাইলট অন্য রাজনৈতিক সম্ভাবনার পথ খুলতেই দিল্লি গেলেন কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
অন্য দিকে পাইলটের করা একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটে থাকা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন। দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাইলটের বিরোধী গহলৌত বিদ্রোহী যুবনেতার বিরুদ্ধে আবার সরব হতে পারেন। ৮ মাস পরেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মরুরাজ্যে দলের মধ্যে এই আড়াআড়ি বিভাজন বেআব্রু হয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে কংগ্রেসও। পাইলটের অভিযোগ, পূর্বতন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের জমানায় ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলি আড়াল করার চেষ্টা করছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সরকার।
মঙ্গলবার সকালে এর প্রতিবাদে জয়পুরের ‘শহিদ সম্পর্কস্থলে’ প্রতীকী অনশন শুরু করেন রাজস্থানের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পাইলট এবং তাঁর অনুগামীরা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঞ্চ বা কর্মসূচি স্থলের কোথাও কংগ্রেসের পতাকা বা প্রতীকচিহ্ন দেখা যায়নি। এই ঘটনাকে পাইলটের ‘কংগ্রেস ছাড়ার পূর্বাভাস’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
রাজস্থানের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা সুখজিন্দর সিংহ রণধাওয়া সোমবার বলেছিলেন, ‘‘রাজস্থানে নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে অনশনে বসছেন পাইলট। তাঁর এই পদক্ষেপ দলবিরোধী।’’ মঙ্গলবার তার জবাবে পাইলট বলেন, ‘‘বিজেপি সরকারের আমলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছি আমি। কী ভাবে তা ‘দলবিরোধী পদক্ষেপ’ হতে পারে? কেন বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতি পালন করছে না? কেন তদন্তে গড়িমসি করা হচ্ছে?’’
পাশাপাশি পাইলট শিবিরের তরফে মঙ্গলবার দাবি তোলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে গহলৌত-ঘনিষ্ঠ যে ৮২ জন বিধায়ক শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হোক। প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে ছিল কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তখন গহলৌতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি সভাপতি হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী পাইলট, এ রকমই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময়ই গহলৌত অনুগামী ৮২ জন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে সরিয়ে দিয়েছিল গহলৌতকে।