নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ চন্নীর পদত্যাগ দাবি করল বিজেপি।
পঞ্জাবে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় যাত্রাপথে অবরোধের জেরে গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে ফিরে আসতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ চন্নীর পদত্যাগ দাবি করল বিজেপি। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘নিরাপত্তায় কোনও গাফিলতি ছিল না। উনি বাহানা খুঁজছিলেন।’’
বুধবার পঞ্জাবের হুসেইনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মারকে একটি কর্মসূচির পর ফিরোজপুরে একটি জনসভা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কথা ছিল, সকালে ভাতিন্দা বিমানবন্দরে নেমে কপ্টারে করে গন্তব্যে পৌঁছবেন তিনি। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় বিমানবন্দর থেকে গাড়িতেই সড়কপথে রওনা দেন তিনি। ওই যাত্রাপথে একটি উড়ালপুলে ১৫-২০ মিনিট আটকে ছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। তার পর সেখান থেকে কনভয় ঘুরিয়ে বিমানবন্দরে ফিরে আসতে হয় মোদীকে।
এই ঘটনার পরই তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয় বিজেপি-র পক্ষ থেকে। ওই বৈঠক থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরাণি বলেন, ‘‘নিরাপত্তায় গলদের জন্য ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি দেশে। প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের জন্য রাস্তা ফাঁকা করা স্থানীয় পুলিশের কাজ। তা কেন করা হল না? এটা চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু না। আমরা পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।’’
ওই ঘটনার পর বিমানবন্দরে ফিরে আধিকারিকদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘বেঁচে ফিরতে পেরেছি, এই অনেক! এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী (পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী)-কে আমার হয়ে ধন্যবাদ জানাবেন।’’
পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারকে সরাসরি নিশানা করে স্মৃতি আরও বলেন, ‘‘আমরা জানি, কংগ্রেস মোদীকে ঘৃণা করে। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি করতে এই চক্রান্ত দেশবাসী কখনওই মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা পঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি। এটাই কংগ্রেস আমলে পঞ্জাবের অবস্থা।’’
অন্য দিকে, বিজেপি-র সব অভিযোগ খারিজ করে মুখ্যমন্ত্রী চন্নী বলেন, ‘‘রাত ৩টে পর্যন্ত সব রাস্তা খালি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সড়কপথে আসার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। উনি বিমানবন্দরে এসে শেষ মুহূর্তে সড়কপথে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। আমাদের তরফ থেকে নিরাপত্তায় গাফিলতির কোনও প্রশ্নই ওঠে না। বিজেপি মিছিলের ডাক দিয়েছিল। কোনও জনসভা ছিল না। ওতে লোক ৭০০ লোক হয়েছিল। তাই বাহানা করে মিছিল বন্ধ করা হয়েছে। ইচ্ছে থাকলেই পৌঁছানো যেত। অন্য রাস্তা দিয়েও যাওয়া যেত।’’
এই ঘটনায় চন্নী সরকারকে নিশানা করেছেন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহও। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্জাবে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে যদি সুরক্ষা দিতে না পারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তা হলে এখনই তাঁদের পদত্যাগ করা উচিত। তাও আবার এমন একটা জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, যেখান থেকে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরেই।’’ প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেস ছেড়েছেন অমরেন্দ্র। একটি নতুন দলও গঠন করেছেন তিনি। জানিয়েও দিয়েছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র সঙ্গে জোট করেই ভোট লড়াইয়ে নামবে তাঁর দল।