ওয়াশিংটনে রবিবার। ছবি: পিটিআই।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে তাঁর বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়ায় জোর ধাক্কা খেয়েছেন আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম। ইদানীং শরীরটাও ভাল যাচ্ছে না। জঙ্গিদের কাছে অর্থের জোগান কমছে দেখে দাউদে আগ্রহ হারাচ্ছে পাকিস্তানও। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের মন্ত্রক চাইছে, হোয়াইট হাউসে গিয়ে দাউদের বিরুদ্ধে ক়ড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমেরিকার উপর চাপ বাড়ান নরেন্দ্র মোদী।
আজই মার্কিন মুলুকে পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক আগামী কাল। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে যাতে দাউদের নাম উঠে আসে, তার জন্য আগে থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিজেপির একাংশ চাইছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই দাউদকে ফেরাতে। যাতে সেই সাফল্যকে তুলে ধরে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারে দল। ভারতে সক্রিয় লস্কর, জইশ, আইএসের মতো জঙ্গিদের ঠেকাতে আমেরিকার সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করার পাশাপাশি, দাউদকে নিয়েও বিশেষ জোর দিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
তৈরি রিপোর্টও। পাকিস্তানে বসে দাউদ কী ভাবে গোটা উপমহাদেশে সন্ত্রাস–ড্রাগের কারবার ‘ডি কোম্পানি’ চালিয়ে যাচ্ছেন, তা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। বলা হয়েছে, গত দু’দশক ধরে ভারতে সন্ত্রাসবাদী কাজে মূল অর্থ জুগিয়ে এসেছেন দাউদই।
আরও পড়ুন:জরুরি অবস্থার ‘ভুল’ মানল কংগ্রেস
তাই মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দাউদকে ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জোরকদমে। এ বছরের গোড়ায় আরব আমিরশাহি সরকার সে দেশে দাউদের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। সূত্রের খবর, ওই পদক্ষেপের পরে অর্থের উৎস অনেকটাই শুকিয়ে গিয়েছে দাউদের। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তেও ধাক্কা খেয়েছে দাউদের জাল টাকার ব্যবসা। তবু সন্ত্রাসে মদত দিয়েই চলেছেন ডন। তাই গোটা উপমহাদেশে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে দাউদকে হাতে পাওয়া কতটা জরুরি, তা-ও বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
২০০৩-এ দাউদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গির তকমা দেয় রাষ্ট্রপুঞ্জ। সম্প্রতি পাকিস্তানে দাউদের ৯টি ঠিকানা প্রকাশ করেছে ভারত। যার মধ্যে ছ’টির অস্তিত্ব মেনে নিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। দাউদ নিজেও সে দেশে কোণঠাসা। নয়াদিল্লি এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছে।
২০০৪-এ পাকিস্তানকে ‘ন্যাটো বহির্ভূত অন্যতম মিত্র দেশ’-এর তকমা দিয়েছিল আমেরিকা। তা কেড়ে নিতে সম্প্রতি বিল আনা হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাই চাইছে, এখন থেকেই দাউদ প্রশ্নে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াক ট্রাম্প প্রশাসন।