প্রতীকী ছবি।
নতুন রণক্ষেত্রের নাম কর্নাটক।
সোমবার গুজরাত ভোটের ফল বেরোনোর পরে রাতেই কর্নাটক ছুটেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লক্ষদ্বীপের সাইক্লোন বিধ্বস্ত এলাকা সফরের আগে ম্যাঙ্গালুরুতে নেমে সমর্থকদের অভিবাদনও কুড়িয়েছেন। টুইটারে ফলাও করে তা প্রচারও করেছেন। অন্য দিকে, গুজরাতে ‘সাফল্যে’র স্বাদ পেয়ে রাহুল গাঁধীও কর্নাটকে দলকে তেড়েফুঁড়ে নামতে বলেছেন। কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে এআইসিসি অধিবেশনও সে রাজ্যে করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। ভোটের আগে জনতার মন ছুঁতে মুখ্যমন্ত্রীকে সিদ্দারামাইয়াকে গোটা রাজ্য সফরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল।
গুজরাতে গদি টিকিয়ে এবং হিমাচল প্রদেশ দখলের পর এখন গোটা দেশে ১৯ রাজ্যে ক্ষমতায় বিজেপি। কয়েক মাস আগে পঞ্জাবে কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে। এ ছাড়া কর্নাটকই একমাত্র বড় রাজ্য, যেটি কংগ্রেসের হাতে রয়েছে। আগামী বছর এপ্রিল-মে নাগাদ সেখানে ভোট। সেটি দখল করতেই এখন মরিয়া মোদী-অমিত শাহ। বিজেপি সভাপতি গতকালই কর্নাটকে ‘জয়’-এর ডাক শুনিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের মতে, গুজরাতে রাহুল গাঁধী না হয় ৩-৪ মাস প্রচার করছেন। কর্নাটকের সংগঠন ঢেলে সাজার কাজ অনেক আগেই শুরু করেছেন রাহুল। ফলে বিজেপি যতই জোর লাগাক, লাভ হবে না।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘‘গুজরাতের কোনও ছাপই পড়বে না কর্নাটকে। রাজ্য ফের জিতে সভাপতি রাহুল গাঁধীকে উপহার দেব।’’ আর বিরোধী বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পার কথায়, ‘‘গুজরাত-হিমাচল জয়ের পর দেওয়াল লিখন স্পষ্ট। মানুষের আস্থা রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর উপরেই।’’ ইয়েদুরাপ্পাকে রাজ্যে ‘পরিবর্তন যাত্রা’য় বেরোতে নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। ২৮ জানুয়ারি সেই যাত্রার শেষ দিনে, কর্নাটকে যাবেন মোদী। এই অবস্থায় বিজেপি ইতিমধ্যেই সেখানে হিন্দুত্বের সুর চড়াতে শুরু করেছে। দলের নেতারা বলতে শুরু করেছেন, গুজরাতের ‘পৈতেধারী হিন্দু’ রাহুল গাঁধী এ বারে কর্নাটকে গিয়ে টুপি পড়বেন! কারণ, সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী টিপু সুলতানের জন্মদিন পালনেই বেশি ব্যস্ত! এই ধরনের প্রচারের পাশাপাশি আজই সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্যে হিন্দুদের উপর ‘আক্রমণের প্রতিবাদে’ বিক্ষোভও দেখানো হয়।
কংগ্রেস বলছে, এই মেরুকরণের রাজনীতিই গুজরাতে করেছে বিজেপি। তাতে যে মানুষ মজছে না, সেটি ফলাফল দেখেই স্পষ্ট। তবে কর্নাটক নিয়ে কংগ্রেসের একটি বড় সমস্যা হল, সেখানে তারা নিজেরাই ক্ষমতায়। গুজরাতে বিরোধী হওয়ার সুবিধা নিয়ে মোদী তথা বিজেপিকে দুষতে সুবিধা হয়েছে রাহুলের। কর্নাটকে হবে উল্টোটা। কর্নাটকের দায়িত্বে থাকা রাহুল-ঘনিষ্ঠ নেতা মধু গৌড় ইয়াস্খী বলেন, ‘‘আমাদের মূল জোর হবে রাজ্যের উন্নয়ন তুলে ধরা। আর কংগ্রেসের সংগঠনের ভিত্তিতে ভোটে লড়া। রাহুল গাঁধী অনেক মাস আগে থেকেই কর্নাটকের সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু করেছেন।’’