মণিপুরে সেনাবাহিনীর টহলদারি। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরে মঙ্গলবার থেকে আরও ছ’মাসের জন্য বর্ধিত করা হল ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ। ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যে এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেল-সহ বেশ কিছু থানা এলাকাকে আফস্পা-র আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। মণিপুরের স্বরাষ্ট্র দফতরের কমিশনার এন অশোক কুমার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কিছু বিক্ষুব্ধ এবং কট্টরপন্থী গোষ্ঠী হিংসাত্মক কার্যকলাপ মোকাবিলা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে জঙ্গি তৎপরতা মোকাবিলার জন্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে বাড়তি ক্ষমতা তুলে দিতে ১৯৫৮ সালে আফস্পা আইন জারি করেছিল কেন্দ্র। ২০২২ সালের গোড়ার দিক পর্যন্ত উত্তর-পূর্বে অসম, নাগাল্যান্ড, রাজধানী ইম্ফল বাদে মণিপুরের বাকি এলাকা এবং অরুণাচলের তিন জেলায় আফস্পা বলবৎ ছিল। এর পর ধাপে ধাপে অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের পর্ব শুরু করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত বছরেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল, উত্তর-পূর্বের যে সব এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বা নাশকতার সমস্যা নেই, সেই এলাকাগুলি থেকে পর্যায়ক্রমে আফস্পা তুলে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু মণিপুরে হিংসা পরিস্থিতি পুরো ‘অঙ্ক’ বদলে দিয়েছে।
মণিপুরের একাধিক অঞ্চলে কুকি ও মেইতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্যের পরিস্থিতি। সম্প্রতি পুলিশ ও সেনার যৌথ অভিযানে সাড়ে ২৮ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে পূর্ব ইম্ফল জেলায়। গত মাসেই মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ দাবি করেছিলেন, জঙ্গলযুদ্ধ এবং ড্রোন হামলায় প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি জঙ্গি মায়ানমার থেকে মণিপুরে প্রবেশ করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এই রিপোর্টকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত হবে না বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কুলদীপ।