আদানি বিতর্কে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিলেন অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
আদানি বিতর্কে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ‘‘বিজেপির কিছু লুকোনোর নেই আর ভয় পাওয়ারও কিছু নেই’’, মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্যই করলেন শাহ। এই বিতর্কে মোদী সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। তার জবাব দিতে গিয়েই এই মন্তব্য করলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা এবং কারচুপি করে নিজেদের শেয়ারের দর বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। আমেরিকার লগ্নি গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশে। শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘সুসম্পর্ক’কে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। আদানির সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক কী? এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গান্ধী। আদানিকাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। এই আবহে গত সপ্তাহে সংসদের দুই কক্ষে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে আদানি প্রসঙ্গে একটা শব্দও খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী। বরং কৌশলে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিয়ে মোদী বলেছেন, ‘‘বিরোধীদের হাতে কাদা রয়েছে বলেই ছুড়ছেন। যত কাদা ছুড়বেন, ততই পদ্ম ফুটবে।’’ আদানি বিতর্কে কেন্দ্রের নীরবতা নিয়ে যখন বার বার সরব হচ্ছে বিরোধীরা, সেই আবহে এ বার মুখ খুললেন শাহ।
তবে বিশদে এ নিয়ে কিছু বলেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে শাহ বলেন, ‘‘বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। শীর্ষ আদালতে যে হেতু মামলাটি রয়েছে, তাই এক জন মন্ত্রী হিসাবে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’’ এর সঙ্গেই শাহের সংযোজন, ‘‘বিজেপির কিছু লুকোনোর নেই। আর কোনও কিছুতে ভয়ও নেই।’’ শাহের আগে এই বিতর্কে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবে তিনিও কৌশলে এই প্রসঙ্গ এড়িয়েছিলেন। শুধু বলেছিলেন, ‘‘এ দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি গোটা বিষয়ে অবহিত। শুধু এখন নয়, তারা বরাবরই সতর্ক।’’
আদানিকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। সেই আবেদনের শুনানিতে গত শনিবার প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কি আমরা ব্যবস্থা নেব? আমরা নীতিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তা সরকারের কাজ।’’ কিন্তু সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘আমরা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির পরামর্শ দিয়েছি। সরকারেরও এই বিষয়ে আগ্রহ থাকা প্রয়োজন। শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও ভারতীয় লগ্নিকারীদের স্বার্থরক্ষা সম্পর্কে আশঙ্কার কথা আমরা সলিসিটর জেনারেলকে জানিয়েছি।’’ সোমবার কেন্দ্রের তরফে শীর্ষ আদালতের কাছে এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।