গুজরাতের স্যর ক্রিকে তিনটি বর্ডার আউট পোস্ট বানানোর কাজ শুরু করেছে বিএসএফ। প্রতীকী ছবি।
গুজরাতের স্যর ক্রিকে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত নিয়ে বিবাদ অনেক পুরনো। সেখানেই এ বার তিনটি বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) বানানোর কাজ শুরু করেছে বিএসএফ। তা নিয়েই আপত্তি তুলেছে পাকিস্তান। এ বার সেই আপত্তি উড়িয়ে ভারত জানাল, নিজেদের আয়ত্তে থাকা এলাকাতেই বিওপি করছে বিএসএফ।
গত মাসে স্যর ক্রিকে ভারত-পাক কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে হয়। ওই বৈঠকেই বিওপি নির্মাণ নিয়ে আপত্তি তোলে পাকিস্তান। ভারতীয় এক সেনা আধিকারিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, যেখানে বিওপি তৈরি করা হচ্ছে সেই এলাকায় ভারতীয় বাহিনী নজরদারি চালায়। কিন্তু পাকিস্তান দাবি করছে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে এসে ভারত নির্মাণ কাজ করছে। তাদের কাছে এ সংক্রান্ত কাগজ আছে বলেও পাক-বাহিনী দাবি করে। যদিও তা অসত্য বলে জানিয়েছেন ওই সেনা আধিকারিক। তাঁর মতে ভারত নিজেদের আয়ত্তে থাকা এলাকাতেই বিওপি নির্মাণ করছে।
স্যর ক্রিকে আটটি বহুতল বাঙ্কার তথা অবজার্ভেশন পোস্ট তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২২ সালের শেষ দিকে ৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। লাখপত ওয়ারি বেত, ডাফা বেত এবং সমুদ্র বেত— এই তিনটি বিওপি হওয়ার কথা। এর ফলে বিএসএফ ওই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চালাতে আরও অনেকটা সুবিধা পাবে। এক একটি বাঙ্কারের উচ্চতা হবে প্রায় ৪২ ফুট। ওই বাঙ্কারগুলিতে র্যাডার থেকে শুরু করে নজরদারির সমস্ত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম থাকবে। একসঙ্গে ১৫ জন সেনাকর্মী থাকতে পারবেন এক একটি তলায়। যে ‘সমুদ্র বেত’-এর নির্মাণকাজ নিয়ে পাকিস্তানের আপত্তি তারা সেটিকে ‘মৌর্য বেত’ বলে অভিহিত করে বলে দাবি। ওই এলাকা নিজেদের আয়ত্তে রয়েছে বলেও দাবি তাদের।
এক সেনা আধিকারিক জানান, পুরোদমে নির্মাণকাজ চলছে। কেন্দ্রীয় পূর্ত মন্ত্রক ওই বিওপিগুলি তৈরির কাজ করছে। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও) বিওপিগুলিতে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। বিএসফকে সবটাই জানানো হয়েছে। কারণ, পাকিস্তানের প্রতিবাদ এবং বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে গোটা ঘটনার কথা বিএসফকে জানিয়ে রাখা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিএসএফের হাতে ২২ জন পাকিস্তানি মৎস্যজীবী, ৭৯টি মাছ ধরার নৌকা এবং প্রায় ২৫০ কোটির হেরোইন স্যর ক্রিকের হারামি নালা অঞ্চলে ধরা পড়ে। পাকিস্তানি মৎস্যজীবী এবং মাছ ধরার নৌকার ক্রমাগত ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা দেখেই ওই বিওপিগুলি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।