COVID-19

দেশ অনেক বেশি প্রস্তুত, দাবি হর্ষের!

ইতিমধ্যে আমেরিকার ওষুধ নির্মাতা সংস্থা গিলিয়াড সায়েন্সেস জানিয়েছে, ভারত সরকারকে সাড়ে চার লক্ষ ভায়াল রেমডেসিভিয়ার দিয়ে সাহায্য করছে তারা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৩
Share:

কোভিড মোকাবিলায় বৈঠকে মোদী। ছবি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। ছবি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।

সারা দেশে আরও এক বার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনার নতুন সংক্রমণ ৩ লক্ষ পেরোল। মৃত্যু ২৭০০-র বেশি। এক মাত্র ইতিবাচক খবর হল, গত কালের চেয়ে এ দিন সংক্রমণ ৮.৪ শতাংশ কম। তবে মোট মৃত্যু পৌঁছে গিয়েছে দু’লক্ষের দোড়গোড়ায়।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন যদিও টুইটারে লিখেছেন, ‘‘কোভিড অতিমারির মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে ভারত এখন ২০২০ সালের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুত— শারীরিক ও মানসিক ভাবে।’’ প্রবল সমালোচিত হচ্ছে তাঁর এই মন্তব্য। কেউ কেউ পাল্টা লিখেছেন, ‘‘মন্ত্রী আসলে ভারতবাসীকে বলছেন, নিজেদের লড়াইটা নিজেদেরই লড়ে নিতে!’’ আজই একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনটি বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠীর সদস্যেরা প্রধানমন্ত্রীকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। যত দ্রুত সম্ভব আরও বেশি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির বিষয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে কাজ করতে অফিসারদের নির্দেশ দেন তিনি। সন্ধ্যায় মোদী জানান, কাতারের আমির তামিম বিন হামাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তামিম কোভিড-যুদ্ধে ভারতকে সাহায্য করতে চেয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক কোভিড পরীক্ষা ও টিকাকরণ হচ্ছে না। বিশেষত দিল্লিতে টিকাকরণ গত ১৫ দিনে ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে সরকারি সূত্রের দাবি। গত কাল রাজধানীতে মাত্র ৪৩,৬৩৭ জনের টিকাকরণ হয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে ৫৭,৬৯০ জনের। সেই পরীক্ষারও প্রায় ৩৫ শতাংশ রিপোর্ট নিয়মিত পজ়িটিভ আসছে। এক সরকারি কর্তার বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল সমস্ত ল্যাবকে ২৪ ঘণ্টায় রিপোর্ট দিতে বলেছেন। তার চাপে একটা সময়ের পরে তারা পরীক্ষা করানো বন্ধ করে দিচ্ছে। আবার সংক্রমণের ভয়ে অনেকে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না বলে টিকাও নিতে যাচ্ছেন না। এ সবেরই প্রভাব পড়েছে সার্বিক পরিসংখ্যানে।’’ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইটারে লিখেছেন, ‘‘রোজগার এবং বিকাশের মতো করোনারও প্রকৃত তথ্য জনতার কাছে পৌঁছতে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার।’’

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মুখপাত্র তারিক জাসেরিভিচের মতে, ভারতের করোনা পরিস্থিতির অবনতির পিছনে রয়েছে লোকের জমায়েত, ভাইরাসের অধিক সংক্রামক স্ট্রেনের উপস্থিতি এবং টিকাকরণের নিম্ন হার। তিনি বলেন, ‘‘অক্সিজেনের মতো জরুরি উপকরণের সরবরাহ বাড়ানো-সহ বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে আমরা কাজ করব।’’ গত কাল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনালাপের পরে কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের কাঁচামাল ও ভেন্টিলেটর-সহ রসদ পাওয়া নিয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছে ভারত সরকার। আজ আমেরিকা জানিয়েছে, কোভিড পরিস্থিতিতে ভারতকে সাহায্য করতে একটি ‘স্ট্রাইক টিম’ পাঠাবে তারা। ওই টিমে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা থাকবেন। কোভিশিল্ড টিকার কাঁচামালও ভারতে পাঠানো হবে। এই প্রসঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা নিজেদের বরাত দেওয়া রসদই সিরাম ইনস্টিটিউটকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এটাই সব চেয়ে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ হবে।’’ ভারতে অক্সিজেনের চাহিদার বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে বলে তিনি জানান।

ইতিমধ্যে আমেরিকার ওষুধ নির্মাতা সংস্থা গিলিয়াড সায়েন্সেস জানিয়েছে, ভারত সরকারকে সাড়ে চার লক্ষ ভায়াল রেমডেসিভিয়ার দিয়ে সাহায্য করছে তারা। ভারতে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকার সহযোগী নির্মাতা ডক্টর রেড্ডিজ় ল্যাবরেটরিজ় মনে করছে, ওই টিকার প্রথম কিস্তি মে মাসের শেষেই রাশিয়া থেকে চলে আসবে। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে ভারতেও ওই টিকার উৎপাদন বাড়বে বলে রেড্ডিজ়ের এক মুখপাত্র আশা প্রকাশ করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement