—প্রতীকী চিত্র।
বাড়ি থেকে দূরে পড়াশোনা করতে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে হস্টেলের ভাড়া। কারণ আগামী দিনে হস্টেলে বা পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকার জন্য মোট ভাড়ার উপর ১২ শতাংশ পণ্য এবং পরিষেবা কর বা জিএসটি দিতে হতে পারে তাঁদের। জিএসটি বিষয়ক আইনের যে নিয়ামক সংস্থা ‘অথোরিটি অব অ্যাডভান্স রুলিং’ (এএআর), তাদেরই একটি বেঞ্চ সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছে। দেশের দুই রাজ্য— উত্তরপ্রদেশ এবং কর্নাটকের এএআর বেঞ্চ জিএসটি সংক্রান্ত দু’টি পৃথক রুলিংয়ে বলেছে, ‘‘হস্টেল বা পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকাকে কখনওই বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকার সঙ্গে তূলনা করা যাবে না। বরং এটা অনেকটাই টাকা দিয়ে হোটেল বা লজে থাকার মতো বিষয়। তাই এই ধরনের পরিষেবা করযোগ্য।’’
পড়াশোনা করতে ইদানীং প্রায়ই ভিন্রাজ্যে যান ছাত্রছাত্রীরা। আবার চাকরি সূত্রেও অনেককে থাকতে হয় অন্য রাজ্যে। এর মধ্যে বেঙ্গালুরু, লখনউ, কানপুরের মতো কর্নাটক এবং উত্তরপ্রদেশের শহরে পড়াশোনা করতে যাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। সে সব ক্ষেত্রে অল্প খরচে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসাবে হস্টেল বা পেয়িং গেস্টে থাকার ব্যবস্থাকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেছে নেন তাঁরা। কারণ, তাতে বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি নিয়ে যেমন তাঁদের ভাবনা চিন্তা করতে হয় না। তেমনই নিরাপত্তা নিয়েও নির্ঝঞ্ঝাট থাকা যায়। এ ছাড়া রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ, জলের পরিষেবার জন্য আলাদা করে ভাবতে হয় না। এএআরের বক্তব্য, এই সমস্ত পরিষেবা যে ভাবে ভাড়ার বিনিময়ে নেওয়া হয়, তাকে কখনওই স্থায়ী বাসস্থানের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।
ওই বেঞ্চ জানিয়েছে, যে সমস্ত হোটেল, ক্লাব, রিসর্ট অথবা ক্যাম্পসাইট দিনে ১০০০ টাকার বেশি ভাড়ার বিনিময়ে অস্থায়ী বাসস্থানের সুবিধা দেয়, গত ২০২২ সালের ১৭ জুলাই থেকেই তাদের জিএসটির আওতাভুক্ত করা হয়েছে। তবে হস্টেল এবং পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ভাড়া দিনে ১০০০ টাকার কম হলেও জিএসটি দিতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি আবেদনের শুনানিতে এই রুলিং বা নির্দেশ জারি করেছে এএআর। যিনি আবেদন করেছিলেন, তাঁকে বলা হয়েছে হোটেলের জন্য প্রযোজ্য নিয়মানুসারেই আবেদনকারীকে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই থেকে হিসাব করে জিএসটি দিতে হবে এবং তা দিতে হবে ১২ শতাংশ হারেই।
এএআরের এই রুলিংয়ের প্রভাব অচিরেই দেশের অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রেও পড়বে কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। অন্য দিকে, কর্নাটক এবং উত্তরপ্রদেশে হস্টেলে বা পেয়িং গেস্টে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের উপর এই কর পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি, বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন অনেকেই।