জেএনইউয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ঐশী ঘোষ-সহ ছাত্রনেতারা। ছবি পিটিআই।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের বামপন্থী ছাত্রদের উপরে চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র নেতা-কর্মী ও তাদের সহযোগী বাইরের কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েক জন ছাত্র এই হামলায় আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এআইএসএ এবং এসএফআই-য়ের নেতৃত্ব। এমস ও সফদরজং হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা করা হয়েছে। রবিবার রাতের এই হামলার বেশ খানিকটা পরে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ বাহিনী। রাতে ঠিক কী হয়েছে, তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের কক্ষে একটি আলোচনাসভার প্রস্তুতির জন্য দুই বাম ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন। সঙ্গে অ-ছাত্র কিছু যুবককে নিয়ে হিন্দুত্ববাদী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-র এক দল ছাত্র সেই ঘরে চড়াও হয়। এবিভিপি-র অভিযোগ, জাতীয়তা-বিরোধী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছিল বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। কথা কাটাকাটির পরে এক সময়ে এবিভিপি-র নেতা-কর্মীরা লোহা ও কাঠের চেয়ার টেবিল তুলে মারধর শুরু করে। এবিভিপি নেতৃত্ব মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করলেও ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো ছাত্র মহলে ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে— পরিচিত হিন্দুত্ববাদী ছাত্রকর্মীরা চেয়ার টেবিল তুলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেটাচ্ছে।
জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সভানেত্রী ও এসএফআই সদস্য ঐশী ঘোষ আহত ছাত্রদের ৪টি ছবি দিয়ে টুইটে লিখেছেন, ‘ফের হামলা করল এবিভিপি-র গুন্ডারা। জেএনইউ কর্তৃপক্ষ কত দিন ঠুঁটো হয়ে থাকবেন? গুন্ডাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ কি তাঁরা করবেন না?’
দিল্লি পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, রাতে ছাত্রদের হাতাহাতির খবর পেয়ে তাঁরা দলবল নিয়ে সংসদ কক্ষে যান। কিন্তু তখন সব মিটে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এবিভিপি ও এআইএসএ— দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করে দাবি করেছে, অন্য পক্ষ তাদের উপরে চড়াও হয়েছিল। আসল ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন তারা।
জেএনইউ-য়ে এবিভিপি-র হামলা নতুন নয়। এর আগে তাদের সশস্ত্র গুন্ডারা পুলিশ পাহারায় এসে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে বিপুল ভাবে জয়ী হওয়া এআইএসএ এবং এসএফআই সদস্যদের উপরে চড়াও হয়েছে। বহু ছাত্র মারাত্মক ভাবে জখম হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ পরে বাম ছাত্রদেরই গ্রেফতার করে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ এসএফআই-এর। এর আগের সশস্ত্র হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া এবিভিপি ও যুব মোর্চার স্থানীয় নেতাদের পুলিশ এত দিনেও ধরেনি।