ফাইল চিত্র
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা ২০ হাজারের থেকে মাত্র ৯৪ কম! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যদিও আশ্বাস দিচ্ছেন, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই জিতবেই দেশ। দিল্লিতে গোষ্ঠী-সংক্রমণ হয়েছে বলেও মানতে চাননি তিনি। উল্টে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার কথায় লোকে ‘ভয়’ পাচ্ছে বলেও কার্যত সংঘাতে জড়িয়েছেন আপ সরকারের সঙ্গে।
আরও ৪১০ জনের মৃত্যুতে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার পেরিয়েছে। কেন্দ্রের পরিসংখ্যানই বলছে, মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫.২৮ লক্ষের বেশি। কিন্তু একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক মনে করিয়েছে, দেশে তিন লক্ষেরও বেশি রোগী সেরে উঠেছেন। অ্যাক্টিভ রোগীর চেয়ে মোট সুস্থের সংখ্যা এখন ১,০৬,৬৬১ বেশি। সুস্থতার হার ৫৮.৫৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২,৩১,০৯৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সংক্রমিত এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ করা-সহ বিভিন্ন আগাম পদক্ষেপের সুফল মিলছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি।
দিল্লিতে কন্টেনমেন্ট এলাকার সংখ্যা এখন ৪২১। আক্রান্ত ৮০ হাজার পেরিয়েছে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী সিসৌদিয়া সম্প্রতি বলেছিলেন, জুলাইয়ের শেষে শুধু রাজধানীতেই রোগী হবে সাড়ে ৫ লক্ষ। আজ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এই প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, ‘‘উপমুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রতিটি ঘরে সংক্রমণ ছড়াবে। হাসপাতালে শয্যাও পাওয়া যাবে না। তিনি সংখ্যার ভিত্তিতে এমন আন্দাজ করেছিলেন। তা ঠিক না ভুল, সেই প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। কিন্তু ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এবং লোকে দিল্লি ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছিল। আমার মনে হয়েছিল, কেন্দ্রের চুপ করে থাকা উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রীও বলেছিলেন দিল্লিকে সাহায্য করতে। আমরা আরও বেশি পরীক্ষা ও কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে জোর দিয়েছি। ৩১ জুলাইয়ে আমরা ভাল অবস্থাতেই থাকব।’’
রাজধানীতে গোষ্ঠী-সংক্রমণ হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে সরাসরি অমিত বলেছেন, হয়নি। এবং যদি হয়, সেই ঘোষণা করতে দ্বিধা করবে না কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘তিন জন সব চেয়ে সিনিয়র কর্তার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল, আইসিএমআর-এর প্রধান বলরাম ভার্গব এবং নয়াদিল্লি এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া। দিল্লিতে ওই পরিস্থিতি (গোষ্ঠী-সংক্রমণ) হয়নি।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, এক সময়ে দিল্লিতে শেষ মুহূর্তে একসঙ্গে বহু নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। তাতে প্রায় ৩০ শতাংশ রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সেই কারণেই গোষ্ঠী সংক্রমণের সম্ভাবনা দেখেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু এখন রোজ ২০ হাজার পরীক্ষা হচ্ছে। ভয়ের কোনও কারণ নেই।
আরও পড়ুন: গাঁধী পরিবারকে বিঁধতে মোদীর অস্ত্র নরসিংহ
‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে দেশের লড়াইয়ে চালকের আসনে রয়েছে জনতাই। লকডাউনের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘‘আজ আমরা আনলক পর্যায়ে এসেছি। এক দিকে করোনাকে হারাতে হবে, অন্য দিকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হবে। মাস্ক, পারস্পরিক দূরত্বের মতো সাবধানতায় ঢিলে দিলে চলবে না।’’ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত কত এগিয়ে আছে, ‘মন কি বাত’-এর গত কয়েকটি সংস্করণে তা ব্যাখ্যা করেছিলেন মোদী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই প্রসঙ্গে আজ অনেক কম শব্দ খরচ করেছেন তিনি।