শরদ পওয়ারের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —পিটিআই
অর্ডিন্যান্স বিতর্কে দিল্লির আপ সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানাতে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে চলেছেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন আপ প্রধান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেজরীওয়াল বলেন, কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন পওয়ার।
বৈঠক প্রসঙ্গে কেজরীওয়াল বলেন, “আমি পওয়ারজিকে বলেছি, আপনার সমর্থন আমাদের প্রয়োজন। একই সঙ্গে তিনি যাতে দেশের অন্য বিরোধী দলগুলিকেও আমাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন, সেই আর্জিও তাঁর কাছে জানিয়েছি আমরা।” কেজরীওয়ালের কথার রেশ ধরে পওয়ারও বলেন, কী কংগ্রেস, কী বিজেডি— সব বিজেপি বিরোধী দলের আপকে সমর্থন করা উচিত। এটা তর্কবিতর্কের সময় নয়, এখন গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে।” বৈঠকের পর কেজরীওয়াল জানিয়েছেন মুম্বই ছাড়ার পর তিনি রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের কাছে দেখা করার সময় চাইবেন। যদিও আপের ডাকে কংগ্রেস কতটা সাড়া দেবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে দিল্লি এবং পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের বক্তব্য শুনতে চান দলের শীর্ষনেতৃত্ব। যদিও গত বুধবার দিল্লিতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করার কথা জানিয়ে যে ১৯টি দলের যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়, তাতে আপের নামও ছিল।
গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। ১২ মে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলে সব বিরোধী দলকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন কেজরীওয়াল।
রবিবার কেজরীওয়ালের বাড়ি গিয়ে তাঁর পাশে থাকার কথা জানিয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। রাজ্যসভায় ওই বিতর্কিত অর্ডিন্যান্সকে বিল হিসাবে পাশ করানোর চেষ্টা হলে সব বিরোধী দল একত্রিত হয়ে তা রুখবে বলেও জানান নীতীশ। নীতীশের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আপ প্রধান। অর্ডিন্যান্স বিতর্কে কেজরীওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন ‘‘রাজ্যসভায় বিজেপি বিরোধী সব দল একজোট হলে ওদের হারানো যাবে। লোকসভা ভোটের আগেই বিজেপিকে হারানোর সুযোগ এসেছে।’’ এমনকি, ‘অত্যাশ্চর্য’ (মিরাক্যাল) কিছু ঘটলে লোকসভা ভোটের আগেই মোদী সরকারের ‘ভবিষ্যৎ’ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলেও জানান মমতা! আপ সূত্রে খবর, বিজেপি বিরোধী সব দলের কাছেই সমর্থন চাইছেন কেজরী। বুধবারই শিবসেনা নেতা (উদ্ধব) উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কেজরীওয়াল।