অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র
আবগারি দুর্নীতি মামলার তদন্তে অরবিন্দ ফার্মা নামক ওষুধ সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর পি শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। কিন্তু অভিযোগ, ওই ওষুধ ব্যবসায়ী নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপিকে চাঁদা দেওয়ার পরে ইডি তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেনি। উল্টে রেড্ডিকে এই মামলার রাজসাক্ষী করে দেওয়া হয়। রবিবার এই নিয়ে প্রশ্ন তুলল আম আদমি পার্টি (আপ)। আপ এই বিষয়ে তিনটি প্রশ্নের জবাব চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে আপ নেতা তথা দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ অভিযোগ করেন, রেড্ডির সংস্থার কাছ থেকে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৬০ কোটি টাকা নিয়েছে বিজেপি। আপের প্রশ্ন, রেড্ডির সঙ্গে বিজেপির কী সম্পর্ক? আবগারি মামলার তদন্ত চালানো দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই কেন এই টাকা নেওয়ার বিষয়ে কিছু জানে না, সেই প্রশ্নও তুলেছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইডি কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল। তার দু’এক ঘণ্টা আগেই প্রকাশিত নির্বাচনী বন্ডের তথ্যকে হাতিয়ার করে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, ২০২২-এ আবগারি দুর্নীতির তদন্তে অরবিন্দ ফার্মা নামক ওষুধ সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর পি শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে সর্বপ্রথম গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতারির পাঁচ দিন পরেই অরবিন্দ ফার্মা ৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনে বিজেপির তহবিলে জমা করে। এরপর কোমরে ব্যথার কারণ দেখিয়ে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে জামিন পান রেড্ডি। ইডি তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেনি। এবং রেড্ডি আবগারি দুর্নীতির মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে যান। এরপরে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে আরও ২৫ কোটি টাকা বিজেপির তহবিলে জমা করে অরবিন্দ ফার্মা। ইডি শুক্রবার দুপুরে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে কেজরীওয়ালকে হাজির করে। সেখানে রাজসাক্ষী হিসেবে রেড্ডির বিবৃতিকেই ইডি কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছে।
নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য বলছে, রেড্ডির অরবিন্দ ফার্মা মোট ৫২ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। তার মধ্যে ৩৪.৫ কোটি টাকাই বিজেপির তহবিলে জমা পড়ে। রেড্ডির অন্য সংস্থা এপিএল হেলথকেয়ার ১০ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। তার পুরোটাই বিজেপির অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। সব মিলিয়ে আবগারি দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত থেকে রাজসাক্ষী হয়ে যাওয়া রেড্ডি বিজেপিকে ৪৪.৫ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছিলেন।
আপের বক্তব্য, দিল্লির বিতর্কিত আবগারি নীতি অনুসারে বেশ কিছু জায়গায় মদের দোকান খোলার অনুমোদন পেয়েছিলেন রেড্ডি। আবগারি মামলাতেই ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। অভিযোগ, কিছু দিন জেলে থাকার পর বয়ান বদলে রাজসাক্ষী হয়ে যান তিনি। তার পর কোমরে ব্যথার কারণ তিনি আদালতে জামিন চাইলে ইডি তার বিরোধিতাই করেনি।