মণীশ সিসৌদিয়া (বাঁ দিকে) এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে তলব করেছে ইডি। এই মামলাতেই গ্রেফতার হওয়া দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াকে গত সোমবার জামিন দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে আপের অন্দরে আশঙ্কার চোরাস্রোত দেখা দিয়েছে। এই আবহেই দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ‘এনডিটিভি’কে জানালেন যে, এখনই তাঁরা বিকল্প কোনও পরিকল্পনা রাখছেন না। তাঁরা কেজরীওয়ালের নেতৃত্বেই কাজ চালিয়ে যেতে চান বলে জানিয়েছেন সৌরভ।
এর পাশাপাশি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশে তোপ দেগে আপ মন্ত্রিসভার এই সদস্য দাবি করেন যে, আপকে ‘রাজনৈতিক ভাবে শাস্তি’ দেওয়া হচ্ছে। তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে, কেজরীওয়াল গ্রেফতার হলে বিকল্প কোনও পরিকল্পনা মাথায় রাখছেন আপ নেতৃত্ব? জবাবে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। আমি মনেও করি না যে, এই বিষয়ে কোনও পরিকল্পনা হয়েছে। কেজরীওয়াল আমাদের নেতা। আমরা তাঁর নেতৃত্বেই কাজ চালিয়ে যাব।”
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া এবং আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহকে আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। সোমবার সিসৌদিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানায়, এই মামলায় প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি প্রায় প্রতিষ্ঠিত। তবে একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তদন্তকারী সংস্থা ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে না পারলে সিসৌদিয়া আবার জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার পরেই কেন্দ্রীয় সংস্থাটি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে সমন পাঠানোয় কেজরীওয়ালের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রসঙ্গত, ওই মামলায় আদালতে জমা দেওয়া দ্বিতীয় চার্জশিটে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছিল ইডি। যা দেখে সরকারি মহলের একাংশের ধারণা, ক্রমশ ‘বৃত্ত’ ছোট করে আনছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
গত ১৬ এপ্রিল আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালকে প্রায় সাড়ে ন’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। পরে এই মামলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেনের খোঁজ পেতে সমান্তরাল তদন্ত শুরু করে ইডি। কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মঙ্গলবারেই দিল্লির মন্ত্রী তথা আপ নেত্রী আতিশী মারলেনা। তিনি বলেন, “খবর আছে, ২ নভেম্বর কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করা হবে। তাঁকে যদি গ্রেফতার করা হয়, তার কারণ দুর্নীতির অভিযোগ নয়, এর কারণ হল তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।” প্রসঙ্গত, আপ সরকারের আমলে আবগারি নীতি বদলে ফেলে কয়েকটি সংস্থাকে বেআইনি ভাবে সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।