চণ্ডীগড়ের সেই বিতর্কিত প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
চণ্ডীগড় পুরনিগমের মেয়র নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসারের ভূমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। সোমবার এই বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টও। শীর্ষ আদালত জানায়, যে পদ্ধতিতে সেখানকার প্রশাসন আপ-কংগ্রেসের জোট প্রার্থীকে হারিয়েছে, তা ‘গণতন্ত্রের হত্যা’। আদালতের এই পর্যবেক্ষণের পরেই সোমবার নতুন একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল আপ। ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, হাতে পেন নিয়ে ব্যালট পেপারের উপরে কাটাকুটি করছেন নির্বাচনী কারচুপিতে অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার। সিসি ক্যামেরায় ওঠা এই ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে আপের দাবি, এটাই ‘বিজেপির স্বৈরাচারে’র প্রমাণ। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
গত ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন ছিল চণ্ডীগড়ে। বিজেপিকে রুখতে ওই নির্বাচনে যৌথ ভাবে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস এবং আপ। পুরপ্রতিনিধিদের ভোটের হিসাবে প্রথমে এগিয়েও গিয়েছিলেন আপ-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কুলদীপ সিংহ। মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোট পায় ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহের পাওয়া ৮টি ভোট বাতিল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা। আপ-কংগ্রেস জোটের অভিযোগ, গণনার ঠিক আগে অনিল নিজেই কলম দিয়ে কয়েকটি ব্যালটে ‘দাগ’ দিয়েছিলেন। পরে সেগুলিই বাতিল করেন তিনি। প্রসঙ্গত, নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়। কিন্তু চণ্ডীগড়ে সেই অফিসারের বিরুদ্ধেই পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে।
আপের ভিডিয়োতেও দেখা যাচ্ছে, ব্যালট পেপারের উপর পেন দিয়ে কিছু লিখছেন অনিল। তার পর সেটাকে কেটে দিচ্ছেন। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এনে আপ তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখে, বিজেপি এ বার মেনে নিক। এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে? দেখুন কী ভাবে বিজেপির প্রিসাইডিং অফিসার ভোট বাতিল করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছেন। এটা বিজেপির স্বৈরাচারের জীবন্ত উদাহরণ।” ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে কংগ্রেস এবং আপের তরফে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টে আবেদন জানানো হলেও তা খারিজ হয়ে যায়। এর পরে সুপ্রিম কোর্টে যায় দুই দলের বিরোধী জোট। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘‘স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, মেয়র নির্বাচনের সময় প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা ব্যালট পেপার বিকৃত করেছিলেন। এট শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’’ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পুরপ্রতিনিধিদের নির্ধারিত বৈঠকের উপরও স্থগিতাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালত।