হাতে ইনসুলিন নিয়ে প্রতিবাদ অতিশী মারলেনা-সহ অন্য আপ নেতাদের। রবিবার দিল্লির তিহাড় জেলের সামনে। ছবি: পিটিআই।
অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে ঘিরে সুগার-বিতর্ক আবারও মাথাচাড়া দিল। রবিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দল আম আদমি পার্টি (আপ) দাবি করল, কেজরীর সুগাল লেভেল (রক্তে শর্করার পরিমাণ) ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। রবিবারই দিল্লির তিহাড় জেলের সামনে হাতে ইনসুলিন নিয়ে বিক্ষোভে শামিল হন আপের নেতাকর্মীরা।
রক্তে শর্করার পরিমাণ (ব্লাড সুগার লেভেল) নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা হোক— এমন আর্জি নিয়ে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান কেজরীওয়াল। সঙ্গে এই আর্জিও জানিয়েছিলেন যে, তাঁকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার সুযোগ দেওয়া হোক। বৃহস্পতিবার সেই মামলারই শুনানিতে ইডির বিশেষ কৌঁসুলি জ়োহেব হোসেন জানান, ব্লাড সুগার বৃদ্ধি করার জন্য জেলে ইচ্ছাকৃত ভাবে বেশি মিষ্টি আর আম খেয়ে যাচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। ইডির আরও দাবি, নিজের ব্লাড সুগারের মাত্রায় তারতম্য ঘটছে, এমনটা দেখিয়েই জামিন নিশ্চিত করতে চাইছেন দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া কেজরীওয়াল।
এই আবহেই আপ নেত্রী তথা দিল্লি সরকারের মন্ত্রী অতিশী মারলেনা রবিবার দাবি করেন, কেজরীওয়ালের সুগার লেভেল ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এমনিতে কোনও ব্যক্তির সুগার লেভেল ৩০০ ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ বলেই মনে করা হয়ে থাকে। রবিবার অতিশী বলেন, “গত ২০ দিন ধরে জেলে রয়েছেন কেজরীওয়াল। তিনি ৩০ বছর ধরে সুগারের রোগী। তাঁর সুগার লেভেল ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আপনি বিশ্বের যে কোনও চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি বলবেন এই পরিস্থিতিতে ইনসুলিন ছাড়া সুগার নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না।” একই সঙ্গে অতিশীর সংযোজন, “বিজেপির নির্দেশে তিহাড় কর্তৃপক্ষ ইনসুলিন দিচ্ছেন না। এই ধরনের নির্মমতা ব্রিটিশরাও দেখাত না।”
আপ এবং কেজরীওয়ালের তরফে যখন ইনসুলিন ব্যবহার করতে দেওয়ার আর্জি জানানো হচ্ছে, সেই সময় দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনাকে একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট পাঠান তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, গত ১০ এবং ১৫ এপ্রিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন এক জন বিশেষজ্ঞ। সেই বিশেষজ্ঞই পরামর্শ দেন যেন যে, সুগারের রোগী কেজরীওয়ালকে ইনসুলিন নয়, খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হোক। আপের অবশ্য দাবি, কেজরীওয়ালের সুগার লেভেল কমাতে ওষুধ নয়, ইনসুলিনের প্রয়োজন। আর সেই ইনসুলিন ব্যবহার করতে নাকি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি হেফাজতে থাকার পর আপাতত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ঠিকানা তিহাড় জেল।