দু’টো পরীক্ষা নিলেই সমস্যার সমাধান হল!

ফেসবুক-ইন্টারনেটের যুগে শুধু একটা এলাকায় প্রশ্ন ফাঁস হয় নাকি!  প্রথমে হয়তো কেউ কেউ পয়সা দিয়ে প্রশ্নপত্র কেনে। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তা দাবানলের মতোই ছড়িয়ে পড়ে। তবে দোহাই, এটা ভাববেন না যে আমাদের প্রজন্মের সকলেই নীতিহীন! যে বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন এসেছিল, তারা সে সব পড়েওনি।

Advertisement

সৃজন সিংহ

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৫২
Share:

অঙ্ক পরীক্ষার আগের দিন বিকেলে মায়ের সঙ্গে অঙ্কের টিচারের কাছেই গিয়েছিলাম। হঠাৎ বাবার ফোন। বললেন, ‘‘শুনেছ, অঙ্কের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

বিকেল গড়িয়ে যখন সন্ধে, অনেক বন্ধুবান্ধবের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র এসে যায়। তাই এখন যখন জানলাম, জুলাইয়ে আবার অঙ্ক পরীক্ষা হতে পারে শুধু দিল্লি-হরিয়ানায়, মন খারাপ শুধু বেড়েই গেল না, খুব অবাক হলাম। ফেসবুক-ইন্টারনেটের যুগে শুধু একটা এলাকায় প্রশ্ন ফাঁস হয় নাকি! প্রথমে হয়তো কেউ কেউ পয়সা দিয়ে প্রশ্নপত্র কেনে। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তা দাবানলের মতোই ছড়িয়ে পড়ে। তবে দোহাই, এটা ভাববেন না যে আমাদের প্রজন্মের সকলেই নীতিহীন! যে বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন এসেছিল, তারা সে সব পড়েওনি।

এখন মনে হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ কোনওভাবে দুটো পরীক্ষা আবার করিয়ে দুনিয়ার সামনে দেখাতে চাইছে, তারা সমস্যার সমাধান করে ফেলল। কিন্তু আমার তো মনে হয়, শুধু দুটো প্রশ্নপত্র নয়। আসলে এ ভাবে সমস্ত প্রশ্নপত্রই ফাঁস হয়। বেশির ভাগ সময়েই আমরা জানতে পারি না। লোকে পয়সা দিয়ে প্রশ্নপত্র কিনে নেয়। এটা ব্যবস্থার ত্রুটি। সর্ষের মধ্যে ভূত না তাড়িয়ে শুধু দুটো পরীক্ষা আবার নিলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?

Advertisement

আর এত ছাত্রছাত্রীর অসুবিধার কথাটা কেউ ভাবলেন না? আজকাল একটা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ছ’ থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগে। ক্লাস টেনের পরীক্ষার পর আরও অনেক ধরনের পরীক্ষা থাকে। যেমন টুয়েলভের পরীক্ষার পর ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষা থাকে। তাদের কী অবস্থা! আমার এক বন্ধু মেঘনা ৬ এপ্রিল থেকে কেমব্রিজে সামার ক্যাম্প করতে যাবে বলে ঠিক করেছিল। ওর বাবা-মা কত পাউন্ড খরচ করে সব ব্যবস্থা করেছিলেন। এখন ওকে কেমব্রিজ যাওয়াটাই বাতিল করতে হবে। আমি তো লম্বা ছুটি কাটাব ভেবেছিলাম।

অনেকের মতো অঙ্ক নিয়ে আমারও উদ্বেগ আছে ঠিকই। কারণ প্রথম পরীক্ষাটা ভাল হয়েছিল। তাই আবার পরীক্ষা! তবে ভয় পাচ্ছি না। কিন্তু পরীক্ষার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল, প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার এই গভীর অসুখ কবে আমার দেশ থেকে বিলুপ্ত হবে?

(লেখক: সিবিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষার্থী)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement