প্রতীকী ছবি।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একটি কট্টরপন্থী দলের সদস্যরা নিয়ন্ত্রণরেখা ভেঙে ভারতে ঢোকার পরিকল্পনা করছেন বলে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের দাবি। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দু’জনেই বক্তৃতা করবেন। ইমরান সেখানে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে কাশ্মীর প্রশ্ন নিয়ে আরও এক বার সরব হবেন। তার ফল কী হয় দেখে নিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখা টপকানোর কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ইমরান নিজে এবং পাক সেনাবাহিনী অবশ্য এমন কর্মসূচির বিরোধিতা করেছেন।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলি জেলার জামাত-ই-ইসলামি নেতা হাবিব উরহমান আফাকি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জের দিকে তাকিয়ে আছি। দেখছি, আন্তর্জাতিক মহল আমাদের সাহায্য করে কি না। নইলে আমরা নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করব। সে ভাবেই প্রচার চালাচ্ছি। ২৭ তারিখের পর লড়াই শুরু হবে।’’ আফাকির দাবি, লোকমুখে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে অন্তত দশ হাজার মানুষ সাড়া দিয়েছেন। তবে এ তথ্য রয়টার্স যাচাই করে দেখেনি।
কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে খুব সাড়া ফেলতে যে তিনি পারেননি, ইমরান নিজে সে কথা মেনে নিয়েছেন সম্প্রতি। তবে নিয়ন্ত্রণরেখা ভাঙার চেষ্টাও তিনি সমর্থন করবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ কাজ করা মানে আন্তর্জাতিক সমর্থন পুরোপুরি হারানো। ‘কাশ্মীরের শত্রু’রাই এমন পথে হাঁটার কথা ভাববেন, হুঁশিয়ারি তাঁর। পাক সেনাবাহিনীরও দাবি, তাঁরা কাউকে নিয়ন্ত্রণরেখা পার করতে দেবেন না। উল্টো দিকে ভারতীয় সেনবাহিনীর মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ও পারে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করার যে চেষ্টা চলছে, সে ব্যাপারে ভারত ওয়াকিবহাল। কাশ্মীরিদের ‘কামানের খাদ্য’ হিসেবে ব্যবহার করলে ফল ভাল হবে না বলে পাল্টা হুমকি দিয়েছেন তিনিও।
শ্রীনগর থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, শুক্রবার উপত্যকায় কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হচ্ছে। মোদী আর ইমরানের বক্তৃতায় চোখ থাকবে কাশ্মীরেরও। এ দিন শ্রীনগরের রাস্তাঘাটে মূলত তাই নিয়েই আলোচনা চলছে। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের বক্তৃতা থেকে বিশেষ কিছু আশা করছেন না আম কাশ্মীরি।
কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুদাসির ইমরান যেমন বললেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জে কী আর হবে? দু’দেশই নিজেদের জয়ী বলে দাবি করবে। আমাদের উপরে কড়াকড়ি কি কমবে?’’ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মুজিব আহমেদের কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জে তো এক সময় গণভোটের কথাও বলা হয়েছিল। ৭০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে!’’ বেশির ভাগই মনে করছেন, মোদী আর ইমরান পরস্পরকে দোষারোপ করা ছাড়া আর কিছুই হবে না শুক্রবার।
এই জাতীয় ভাবনা পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও কিন্তু রয়েছে। রাওয়ালকোটে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সুবিয়াল রশিদ যেমন বলছেন, ‘‘কাশ্মীরে কী হল, তাতে কি ইমরানের সত্যি কিছু যায় আসে?’’ সুবিয়াল নিজেই তরুণদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা ডিঙোনোর জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। সঙ্গে হ্যাশট্যাগ, ‘টুইটটুসুলতান’। কট্টরবাদীদের খেদ, ইমরান নাকি টুইট ছাড়া আর কিছুই করেন না!