প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের আইএএস কোটিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখলেন এক পড়ুয়া। রাজেন্দ্রনগর হোক বা মুখার্জি নগর, দিল্লির এই সব জায়গা কোচিং হাব নামে পরিচিত। সেখানে হাজার হাজার পড়ুয়া আসেন প্রতি বছর। সেখানে থেকেই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু এই এলাকায় জীবনযাপন একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয় বলে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন অবিনাশ দুবে নামে এক পড়ুয়া। পাশাপাশি, এই সব এলাকা নিয়ে পুরসভার উদাসীনতাকেও তুলে ধরেছেন তিনি।
অবিনাশের চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে কোচিং সেন্টারগুলি এবং সেখানকার পারিপার্শ্বিক এলাকার অব্যবস্থার কথা। চিঠিতে পড়ুয়ামৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি লেখেন, ‘‘অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্ট জলে ভরে যায়। আর তাতেই তিন জন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। মুখার্জিনগর, রাজেন্দ্রনগরের মতো এলাকায় পুরসভার অবহেলার কারণে বহু বছর ধরে জল জমার সমস্যা দেখা দেয়। হাঁটু পর্যন্ত জল জমে এই সব এলাকায়। ড্রেনের জল উঠে আসে। তার মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। আজ আমাদের মতো পড়ুয়ারা এই সব এলাকায় নরকের মধ্যে জীবনযাপন করছি। তার মধ্যেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
রাজেন্দ্রনগরের মতো এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা একেবারেই ভাল নয়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই সমস্যা দিনে দিনে জটিল হয়ে উঠছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমার মতো সমস্যা দেখা দেয়। কখনও কখনও আবার জল বাড়ির মধ্যেও ঢুকে পড়ে। সেই কথাও চিঠিতে উল্লেখ করে অবিনাশ লেখেন, ‘‘আমাদের মতো পড়ুয়ারা এমন অবস্থাতে থেকে নিজেদের লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছি। কিন্তু রবিবারের ঘটনা প্রমাণ করল আমাদের মতো পড়ুয়াদের জীবন নিরাপদ নয়। দিল্লি সরকার এবং পুরসভা আমাদেরকে এমন ভাবে জীবনযাপন করতে বাধ্য করছে।’’
অবিনাশ আরও লেখেন, ‘‘সুস্থ জীবনযাপন করা আমাদের মৌলিক অধিকার।’’ তিনি শীর্ষ আদালতকে অবিলম্বে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। স্থায়ী সমাধান খোঁজার আর্জিও জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারে বেসমেন্টের জমা জলে ডুবে মৃত্যু হয় তিন পড়ুয়ার। তাঁরা আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে লাইব্রেরিতে গিয়েছিলেন ওই পড়ুয়ারা। সেখানেই আচমকা ঢুকতে শুরু করে বৃষ্টির জল। অনেকে বেরিয়ে গেলেও তিন জন বেরোতে পারেননি। তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বেসমেন্টেই। মৃত পড়ুয়ারা হলেন, তানিয়া সোনি (২৫), শ্রেয়া যাদব (২৫) এবং নেভিন দালউইন (২৮)।