কাশ্মীরে নিহত বাঙালি জওয়ান।
কাশ্মীরে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে একের পর এক সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে বলে কয়েক দিন আগেই দাবি করেছিল বাহিনী। উপত্যকায় সক্রিয় অধিকাংশ জঙ্গি নেতাই নিহত হওয়ায় জঙ্গি সংগঠনগুলি ফাঁপরে পড়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছিল। তার মধ্যেই আজ অনন্তনাগের বিজবেহারায় সিআরপিএফের উপরে হামলা চালাল জঙ্গিরা। তাতে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এক জওয়ানের সঙ্গে মৃত্যু হল স্থানীয় বাসিন্দা নিহান ইয়াওয়ার নামে বছর পাঁচেকের এক বালকেরও।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ দুপুরে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগের বিজবেহারায় পাদশাহি সেতুর কাছে টহল দিচ্ছিল সিআরপিএফের ৯০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের একটি দল। বারোটা নাগাদ হঠাৎ মোটরবাইকে এসে সেই দলটিকে লক্ষ্য করে গুলি ও গ্রেনেড ছোড়ে জঙ্গিরা। তাতে সিআরপিএফ জওয়ান শ্যামলকুমার দে ও নিহান গুরুতর আহত হন। নিহানের বাবা ছেলেকে নিয়ে ওই এলাকায় ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় শ্যামল ও নিহানের। জঙ্গিদের খোঁজে গোটা এলাকা ঘিরে তল্লাশি শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। পুলিশ জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর জঙ্গি জ়াহিদ ডাস এই হামলা চালিয়েছে। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার কথায়, ‘‘গ্রেনেড হামলায় বালকের মৃত্যু জঘন্য অপরাধ।’’ পিডিপি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘ছোট্ট কফিনগুলিই সব চেয়ে ভারী।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের দণ্ডরা পঞ্চায়েতের সিংপুর গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল ২০১৫ সাল থেকে শ্রীনগরে মোতায়েন ছিলেন। তাঁর মৃত্যুসংবাদে গোটা গ্রাম শোকাচ্ছন্ন। এ দিন তাঁর বাড়িতে আসেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া, বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া ও প্রশাসনের কর্তারা। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা নিয়ম মেনে ওঁর শেষকৃত্যে গার্ড অব অনার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।” পেশায় চাষি বাদলকুমার দে ও গৃহবধূ শিবানী দে-র একমাত্র সন্তান ছিলেন শ্যামল। ছেলেকে হারিয়ে কথা বলার অবস্থায় নেই শিবানী। আর বাবার হাহাকার, “আমার সব শেষ হয়ে গেল।”
অন্য দিকে দক্ষিণ কাশ্মীরেরই পুলওয়ামার ছেওয়া উলারে গত কাল থেকে চলা সংঘর্ষে নিহত হয়েছে তিন জঙ্গি। ওই এলাকায় আরও জঙ্গি লুকিয়ে থাকতে পারে. তাই অভিযান এখনও চলছে।