ফেরার মোদীর ‘গুরু’, হিংসা ছড়াচ্ছে প্রতিবেশী রাজ্যেও

পঁচাশি বছরের শম্ভাজি ভিডে। গত লোকসভা ভোটের আগে তাঁরই গ্রামে গিয়ে সভা করেছিলেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪২
Share:

শম্ভাজি ভিডে

ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিতদের উপরে হামলার ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীর যে ‘গুরু’-কে গ্রেফতারের দাবি উঠছে, তিনি নিজেই গা-ঢাকা দিয়েছেন।

Advertisement

পঁচাশি বছরের শম্ভাজি ভিডে। গত লোকসভা ভোটের আগে তাঁরই গ্রামে গিয়ে সভা করেছিলেন মোদী। বলেছিলেন— সেটা কারও আমন্ত্রণে নয়, ‘গুরুজি’ হুকুম দিয়েছেন তাঁকে।

মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিতদের উপর হিন্দু সংগঠনের হামলার পিছনে আঙুল উঠেছে মোদীর এই তথাকথিত ‘গুরুজি’র দিকেই। হিংসা ছড়ানোর জন্য এফআইআরও দায়ের হয়েছে। কিন্তু ‘গুরুজি’ এখনও ফেরার। অম্বেডকরের নাতি প্রকাশ অম্বেডকরের দাবি, যাঁকে ‘গুরু’ বলে ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট করুন প্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে আজ জিগ্নেশ মেবাণী ও উমর খালিদের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। মুম্বইয়ে ছাত্রদের সমাবেশে তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশ ছাত্রদের আটক করার পর সেই সভাও বাতিল হয়েছে।

Advertisement

গত কালের বন্‌ধের পর আজ মুম্বই আপাত ভাবে শান্ত ছিল। কাল বিক্ষোভের সময় এক কিশোরের মৃত্যুর জন্য আঙুল উঠেছিল পুলিশের দিকে। আজ পুলিশ দাবি করেছে, পালাতে গিয়েই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। আন্দোলনের আঁচ আজ ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্যেও। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ, এমনকী খোদ মোদী-রাজ্য গুজরাতেও। মহারাষ্ট্রগামী শ’খানেক বাস আটকে হামলা হয়। কাল রাতে গুজরাতে পোড়ানো হয়েছে একটি বাস। আজ জুনাগড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। ভীমা-কোরেগাঁওয়ে হামলার প্রতিবাদ জানাতে এ দিন মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুরে বন্‌ধের ডাক দেয় বুদ্ধিস্ট সোসাইটি, ভীম সেনার মতো কয়েকটি দলিত সংগঠন। দোকানপাট বন্ধ ছিল। ১১টি আন্তঃরাজ্য বাসকে থামিয়ে ভাঙচুরও করা হয়।

দলিত নিগ্রহের কলঙ্ক ফের নরেন্দ্র মোদীর ঘাড়ে আসায় বিব্রত বিজেপি। বিরোধীরা বিতর্কটি শুধু মহারাষ্ট্রে সীমিত না রেখে মোদীকে ‘দলিত-বিরোধী’ হিসেবে তুলে ধরে জাতীয় স্তরেও প্রচারকে তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে। আজ রাজ্যসভাতেও কংগ্রেস, সপা, বসপা, এনসিপি-সহ বিরোধীরা এই প্রশ্নে মোদী সরকারের সমালোচনা করে। এমনকী বিজেপির শরিক নেতা রামদাস আঠাওয়ালেও বিজেপি জমানায় নিরন্তর দলিত-নিগ্রহ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।

চাপের মুখে বিজেপির পাল্টা দাবি, জিগ্নেশ, উমর খলিদরাই উস্কানিমূলক বক্তৃতা করে ভিড়কে তাতিয়েছেন। এই ‘ভারত বিভাজনকারী’ শক্তিকে মদত দিচ্ছেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু প্রকাশ বলছেন, জিগ্নেশরা ছিলেন ৩১ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানে। আর দলিতদের উপর হামলা হয়েছে ১ জানুয়ারি। ফলে জিগ্নেশদের দায়ী করা যায় না। এটা নিছকই বিজেপির চাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement