লখনউয়ে বিজেপির দফতরের সামনে অজয় মিশ্র। পিটিআই
লখিমপুর খেরি কাণ্ডের জন্য আপাতত শিরোনামে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিস। কিন্তু এর আগেও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছিলেন খেরি কেন্দ্রের সাংসদ। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলায় ১৭ বছর আগে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে পেশ করা আপিলের রায় দান এখনও স্থগিত। বিরোধীদের দাবি, এটা ভারতের আইনি ইতিহাসে এমন ঘটনার নজির সম্ভবত আর নেই।
২০০০ সালে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিরোধের জেরে সমাজবাদী পার্টির নেতা প্রভাত গুপ্তকে খুন করার অভিযোগ ওঠে অজয়ের বিরুদ্ধে। ২০০৪ সালে অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালতে মুক্তি পান অজয়। উত্তরপ্রদেশ সরকার ও প্রভাতের ভাই রাজীব গুপ্ত হাই কোর্টে আপিল করেন। ২০১৮ সালে সেই মামলার রায় দান স্থগিত রাখে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চ। এখনও সেই রায় ঘোষিত হয়নি।
এখনও এই মামলা নিয়ে উদ্যোগী প্রভাতের ভাই রাজীব গুপ্ত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিচার দ্রুত হলে বিচার পথ ভ্রষ্ট হত না।’’ রাজীব এখন শিবপাল যাদবের দলের সদস্য। সেপ্টেম্বর মাসেই রাজীবের আর্জির ভিত্তিতে তাঁকে দেওয়া সুরক্ষা নিয়ে রিপোর্ট চায় আদালত। সেই সঙ্গে রাজীবকে ফের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলে হাই কোর্ট।
রাজীব হাই কোর্টে পেশ করা আবেদনে জানান, অজয় মিশ্রের বিরুদ্ধে তিনি অন্যতম মামলাকারী। সেই সঙ্গে মামলার সাক্ষী ও তাঁদের আর এক ভাই সঞ্জীব গুপ্তের আইনি প্রতিনিধিও। কিন্তু খেরি প্রশাসনের কর্তারা তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন। তাঁর দাবি, অভিযুক্ত এক জন প্রভাবশালী মন্ত্রী। তাই তাঁর সঙ্গে যথাযথ আচরণ করা হবে, এটা তিনি বিশ্বাস করেন না। তাই নিরাপত্তা নিয়েও হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অজয় মিশ্রের ছেলে আশিসকে গ্রেফতারের দাবিতে মৌনব্রত এবং অনশন শুরু করেছেন পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। হিংসায় প্রাণ হারানো সাংবাদিক রমন কাশ্যপের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে লখিমপুর খেরিতেই অনশন শুরু করেন তিনি। সূত্রের বক্তব্য, সিধু জানিয়েছেন, আশিসকে গ্রেফতার করে পুলিশ ওই নিহত সাংবাদিকের বাড়িতে না নিয়ে আসা পর্যন্ত তাঁর আন্দোলন চলবে।
বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা এক আলোচনা চক্রে জানিয়েছন, লখিমপুর খেরির ঘটনায় পেশাদার ও বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্ত হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দল বা সরকার কোনও দিক থেকেই আইন হাতে তুলে নেওয়াকে সমর্থন করি না আমরা। যা পদক্ষেপ করার তা করা হবে। প্রত্যেকে সুবিচার পাবেন।’’