দামো জেলার গ্রামবাসীরা বিদায় জানাচ্ছেন পাঁচুবাইকে। ছবি ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
৯৩ বছরের পঞ্চুবাই। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা তিনি। প্রায় ৪০ বছর আগে হারিয়ে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশে। তখন মধ্যপ্রদেশের দামো জেলার এক ব্যক্তি উদ্ধার করেছিলেন তাঁকে। তার পর তাঁদের সঙ্গেই চার দশক কাটিয়েছেন পঞ্চুবাই। সম্প্রতি নিজের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন হয়েছে তাঁর। তাঁকে নিতে তাঁর পরিবারের লোকেরা এসেছিলেন, তখন বিদায় জানাতে এসে গোটা গ্রামবাসীর চোখে জল। এই ঘটনার ভিডিয়ো দেখে আবেগে ভাসছেন নেটাগরিকরা।
পঞ্চুবাইয়ের বয়স যখন ৫৩ ছিল তখন তাঁকে উদ্ধার করেছিলেন নুর খান। ১৯৮০-তে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন নুর। তার পর থেকে ওই মুসলিম পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন তিনি। যদিও তাঁর মাতৃভাষা মরাঠি সেখানকার কেউ বুঝত না। তবুও এক সঙ্গে থাকার সুবাদে গড়ে উঠেছিল আত্মিক সম্পর্ক। সবাই তাঁকে মাসি বলে সম্বোধন করতেন। এই চার দশকে তাঁদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী ছিলেন তিনি।
২০০৭-এ নুর মারা গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের লোকের সঙ্গেই থাকতেন পঞ্চুবাই। সবাই নুরের ছেলেদের কাছে তিনি ছিলেন দিদিমার মতন।
সম্প্রতি নুরের ছেলে ইসরার খান মোবাইল ঘাঁটছিলেন পঞ্চুবাইয়ের পাশে বসে। তখন সে পঞ্চুবাইয়ের গ্রামের নাম জিজ্ঞাসা করেন। তাঁর শিকড় জানতেই সে সব জি়জ্ঞাসা করেন তিনি। পঞ্চুবাই তাঁর এলাকার নাম বলেন। সেই নাম গুগলে সার্চ করেন ইসরার। সেখানকার এক ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্বও হয় তাঁর। তার পর হোয়াটসঅ্যাপে পঞ্চুবাইয়ের ছবি পাঠান তিনি। এর পরই তাঁর পরিবারের লোক যোগাযোগ করেন ইসরারের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: শেষ ৩৩ দিনেই তিন লক্ষ আক্রান্ত দেশে, মৃত্যু ছাড়াল ১৩ হাজার
৯৩ বছরের দিদিমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সম্প্রতি নাগপুর থেকে এসেছিলেন পৃথ্বীকুমার শিঙ্গলে। এ বার মাসিকে বিদায় দিতে হবে। তাই সেখানকার গ্রামবাসীরা জড়ো হন। নতুন শাড়ি পরিয়ে পঞ্চুবাইকে বাড়ি লোকের হাতে তুলে দেন ইসরারের পরিবার-সহ গ্রামবাসীরা। প্রিয় মাসিকে চলে যেতে দেখে কেউ ভেঙে পড়েন কান্নায়। ইসরার এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘‘আমাদের কান্না দেখে দিদিমার (পঞ্চুবাই) পরিবার নিয়ে যেতে চাইছিল না। কিন্তু তাঁকে পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পেরে আমরা খুব খুশি।’’ যদিও কী করে তিনি মহারাষ্ট্রের নিজের গ্রাম থেকে মধ্যপ্রদেশের দামোতে এসেছিলেন সে ব্যাপারে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় আসছে দেশীয় ওষুধ, একটি ট্যাবলেটের দাম ১০৩ টাকা