গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শ্মশানের পাশেই তাদের বাড়ি। রবিবার সন্ধ্যায় শ্মশানে বসানো ঠান্ডা জলের মেসিন থেকে বোতলে জল ভরতে গিয়েছিল ৯ বছরের মেয়েটি। অভিযোগ, সেখানে তাকে ধর্ষণের পরে খুন করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। তার পরে বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়াই দেহটি দাহ করে দেওয়া হয় শ্মশানের চুল্লিতে। স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ দেখানোর পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গ্রেফতার করেছে প্রধান অভিযুক্ত শ্মশানের পুরোহিত এবং তাঁর কয়েক জন সঙ্গীকে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পুরনো নাঙ্গালের ঘটনা। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার সময়ে মাকে বলে শ্মশানযাত্রীদের জন্য বসানো কুলার থেকে জল ভরতে গিয়েছিল মেয়েটি। বেশ কিছু ক্ষণ পরেও সে না-ফেরায় চিন্তা করছেলিন মা। এর পরে শ্মশানের পুরোহিত রাধেশ্যাম কয়েক জন লোককে দিয়ে ডেকে পাঠান মাকে। মেয়েটির দেহ দেখিয়ে বলেন, কুলার থেকে বিদ্যুতের ছোবল খেয়ে মারা গিয়েছে সে। মা জানিয়েছেন, মেয়ের ডান হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত পোড়া দাগ ছিল। ঠোঁটও নীল হয়ে গিয়েছিল। পুরোহিত তাঁকে পুলিশে না-জানানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, এতে ঝামেলা বাড়বে। দেহ নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত করবে পুলিশ। মর্গ থেকে তার নানা প্রত্যঙ্গ চুরি করে নেবে। তার চেয়ে চুপিচুপি সৎকার করে দেওয়া ভাল।
মেয়েটির মা জানান, এর পরে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফেরেন তিনি। মেয়েটির বাবাকে ডাকেন পরামর্শ করার জন্য। কিন্তু তাঁদের না-জানিয়ে মেয়েটির দেহ ওই শ্মশানেই পুড়িয়ে দেন ওই পুরোহিত ও তাঁর সঙ্গীরা। গরিব পরিবারের বাবা-মা তখন চেঁচামেচি করে লোক জড়ো করেন। প্রমাণ লোপের জন্যই তাঁদের না-জানিয়ে তড়িঘড়ি দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হল কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন।
ক্যান্টনমেন্ট থানার এক কর্তা জানান, প্রায় ২০০ লোক শ্মশানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। সেখানেই মেয়েটির মায়ের বয়ান রেকর্ড করা হয়। মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, এমন সন্দেহ প্রকাশ করে তার পরিবার। এর পরে শ্মশানের পুরোহিত ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়। শ্মশান থেকে প্রমাণও সংগ্রহ করা হয়েছে।