লাহুল-স্পিতি উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। ছবি: পিটিআই।
উত্তরাখণ্ডের পর এ বার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে হিমাচল প্রদেশ।
উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয় ডেকে এনেছিল প্রবল বৃষ্টি আর ধস। হিমাচলে বিপত্তি বাড়িয়েছে প্রবল তুষারপাত। হিমাচল প্রদেশ প্রশাসন সূত্রের খবর, খারাপ আবহাওয়া এবং প্রবল তুষারপাতের জেরে লাহুল-স্পিতি জেলার বাতালে আটকে পড়েছেন কমপক্ষে ৮০ জন পর্যটক। তাঁদের মধ্যে ১৬ জন পশ্চিমবঙ্গের বলে জানিয়েছেন এক প্রশাসনিক কর্তা। বাকিরা দিল্লি, পঞ্জাব-সহ অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দা বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
প্রবল তুষারপাতের জেরে গাম্ফু-কাজ়া সড়কপথে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ১৭ অক্টোবর থেকে বাতালের ওই অঞ্চলে আটকে রয়েছেন ওই পর্যটকেরা। গত চার রাত বরফে ঢাকা ওই এলাকায় এ ভাবেই আটকে ছিলেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না-পেরে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁদের আত্মীয়েরা। তখনই বিষয়টি প্রথম নজরে আসে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। কর্তাদের দাবি, দুর্গম ওই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ। সে কারণেই হয়তো খবরটি সময় মতো পৌঁছয়নি তাঁদের কাছে।
তবে তাঁদের আত্মীয়দের কাছ থেকে পর্যটকদের নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে সময় নষ্ট করেনি স্থানীয় প্রশাসন। তড়িঘড়ি সেনার হেলিকপ্টার নিয়ে সন্ধানে নামেন জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। যদিও হেলিকপ্টার ওই পর্যটকদের চিহ্নিত করতে পারেনি বলেই জানা যাচ্ছে। এ দিকে গাড়িতে করে পর্যটকদের খোঁজে রওনা হয়েছিল প্রশাসনের আর একটি দল। তাদের সঙ্গী হয়েছিলেন কয়েক জন স্থানীয় যুবকও। শেষমেশ বাতালের কাছে পৌঁছতে প্রথম এই দলটির নজরে পড়েন ওই পর্যটকেরা। সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সেই ঘটনার টুকরো টুকরো ভিডিয়ো।
প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, খোঁজ পাওয়ার পর থেকে এই ৮০ জনকে উদ্ধার করতে জোর কদমে পরিকল্পনা চলছে। লাহুল-স্পিতির ডিসি নীরজ কুমারের কথায়, ‘‘পর্যটক দলটি নিরাপদেই রয়েছেন। বাতালের একটি সরকারি হোটেল এবং চাচা-চাচি কা ধাবা নামে স্থানীয় এক ধাবায় রয়েছেন সকলে। সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাহায্যে আগামী কালের মধ্যেই তাঁদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হবে। কালের মধ্যে গাম্ফু-কাজ়া সড়ক যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা যাবে বলেই আশাবাদী আমরা।’’ যদিও আবহাওয়া দফতরের সতর্কবাণী, এখনই আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার আশা নেই হিমাচল প্রদেশ, লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীরের মতো হিমালয় লাগোয়া রাজ্যগুলিতে। অন্তত রবিবার পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি এবং তুষারপাত অব্যাহত থাকারই আশঙ্কা এ সব জায়গায়।
এ দিকে, বৃষ্টি এবং ধসে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। রুদ্রপুরে ত্রাণ শিবিরে দুর্গতদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে। করা হয়েছে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও। এ দিন চামোলি জেলার ডাংরি গ্রামে যান উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। বৃষ্টিপাতের জেরে নামা ধসে প্রিয়জন হারানো পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাদের সরকারি সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।