দোকানে গল্প করতে আসতেন চার বৃদ্ধ। বছর তিরিশের চাওয়ালি পোনী দেবীর সঙ্গে বেশ গল্প করতেন তাঁরা। কিন্তু প্রত্যেকেই তলে তলে একে অন্যের অজান্তে চাওয়ালির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। সেই সম্পর্ক বেশ ভালই চলছিল। এক দিন চার জনের প্রত্যেকেই জানতে পারেন, পোনী দেবীকে নিয়ে তাঁদের একটা দুর্বলতা রয়েছে। আর সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েছিলেন চাওয়ালি।
পোনী দেবীর চার বৃদ্ধ প্রেমিক একে অপরের সম্পর্ক জানতে পেরেছিলেন এক দিন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের মধ্যে সেই সম্পর্ক নিয়ে আপস করেছিলেন। ফলে পোনীকে নিয়ে চার প্রেমিকের ভালই দিন কাটছিল। রোজ দোকানে গল্প করতে আসা, পোনীকে সময় দেওয়া, সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল।
কিন্তু সেই প্রেমের সংসারে হঠাৎই আবির্ভাব হল পঞ্চম ব্যক্তির। বয়স ৭৫। নাম নৃপিত শর্মা। তিনিও পোনীর দোকানে চা খেতে আসতেন। লক্ষ করেছিলেন, চার বৃদ্ধ পোনীর সঙ্গে নানা ধরনের গল্প, কথা নিয়ে মশগুল থাকতেন। ধীরে ধীরে পোনীর প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন। এক দিন নৃপিত স্থির করেন, পোনীকে তাঁর মনের কথা জানিয়ে দেবেন। পোনীকে বিয়ে করে শেষ জীবন কাটানোর প্রস্তাবও দেন নৃপিত। তাতে সায় দেন পোনী। ফলে পাঁচ জনের সঙ্গেই সমান্তরালে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন চাওয়ালি।
কিন্তু তাঁদের প্রেমের সংসারে নৃপিতের আবির্ভাব মেনে নিতে পারেননি চার বৃদ্ধ। নৃপিতকে নিয়ে পোনীর বাড়বাড়ন্তও খুব একটা ভাল চোখে দেখছিলেন না তাঁরা। ফলে চাওয়ালিকে সরাসরি তাঁদের আপত্তির বিষয়টি জানিয়ে দেন ওই চার প্রেমিক।
ঘটনার মোড় নেয় এখান থেকেই। চার জনের আপত্তি দেখে পোনীও নৃপিতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। অভিযোগ, এই সম্পর্ক থেকে নৃপিতকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার সূত্রপাত হয় এখান থেকেই। পথের কাঁটা নৃপিতকে একটি ফাঁকা জায়গায় ডাকেন পোনী। সেখান থেকে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে নিয়ে যান তিনি। সেখানে আগে থেকেই চার প্রেমিক হাজির ছিলেন। নৃপিত সেখানে যেতেই চার জন তাঁকে ঘিরে ধরেন। চার জনকে সেখানে দেখতেই তাঁদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায় নৃপিতের। অভিযোগ, এর পরই নৃপিতকে পাঁচ জন মিলে বেধড়ক মারধর করেন। মাটিতে পড়ে গেলে তাঁর মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়। দেহ লোপাট করতে বাড়িটির জলের ট্যাঙ্কে নৃপিতের দেহ ফেলে দেন ওই পাঁচ জন।
ঘটনাটি ২১ অক্টোবরের। নৃপিত বাড়িতে না ফেরায় তাঁর ছেলে মিঠ্ঠু কুমার পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে পোনীর খোঁজ পায়। পোনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁর মধ্যে অসঙ্গতি লক্ষ করেন তদন্তকারীরা। তাঁকে চেপে ধরতে চার প্রেমিকের কথা জানতে পারেন তাঁরা। ওই চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে খুনের কথা প্রকাশ্যে আসে। এর পরই চার বৃদ্ধ এবং চাওয়ালিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জলের ট্যাঙ্ক থেকে কয়েক দিন বাদে নৃপিতের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি বিহারের নালন্দার।