প্রতীকী ছবি।
মুম্বই এবং দিল্লির মতো বড় শহরগুলিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ নিয়ে আলোচনা চলছে দেশজুড়ে। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকটি ছোট শহরেও গত দেড় সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে উদ্বেগজনক ভাবে। দ্রুত বাড়ছে প্রাণহানির ঘটনাও। সেই তালিকার অন্যতম নাম ছত্তীসগঢ়ের জেলাসদর দুর্গ।
জঙ্গল ঘেরা এই ছোট শহরে গত ১ সপ্তাহে ৬,০০০ জন নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। এঁদের মধ্যে মারা গিয়েছেন ৩৮ জন। করোনায় মৃতদের সম্মানহানির ঘটনা গত এক বছরে খবরে এসেছে অনেক বারই। সেই তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন দুর্গ। অভিযোগ, শহরের একমাত্র সরকারি হাসপাতালের মর্গে ডাঁই করে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি দেহ। কারণ, স্থানাভাব। শহরের ওই সরকারি হাসপাতালের ৬টি ফ্রিজারে মাত্র ২৭টি দেহ রাখার বন্দোবস্ত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি কয়েকটি দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।
শহরের ওই সরকারি হাসপাতালে রয়েছে, ৫০০টি বেড। করোনা রোগীদের ভিড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকদের কার্যত দিশেহারা অবস্থা। হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপার পি আর বালকিশোর বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই বহু সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছেন। গড়ে দিনে ৫-৬ জন মারা যাচ্ছেন। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হওয়ার পরেই তাঁদের ভর্তি করানো হচ্ছে। তখন শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ ৪০ বা ৫০ শতাংশে নেমে আসায় বহু ক্ষেত্রেই চিকিৎসায় সাড়া মিলছে না।’’
কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনও কোনও ‘বিকল্প পরিকাঠামো’ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি বলেও জানিয়েছেন বালকিশোর। চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের অভাবের কথাও জানান তিনি। চিফ মেডিক্যাল সুপার জানান, অবস্থা দেখে অন্যান্য রোগীদের জন্য জেলার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা। দুর্গ জেলার পরিস্থিতি দেখে সেখানে মঙ্গলবার থেকে ফের লকডাউন জারি করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুধু দুর্গ নয়। ছত্তীসগঢ়ের বেশ কিছু জেলাতেই গত এক সপ্তাহে কোভিড পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটেছে। গত ১ সপ্তাহে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৬৯ শতাংশ। ২০ মার্চ করোনা রোগীর সংখ্যা ৬,৭৫৩ হলেও এপ্রিলের গোড়ায় তা বেড়ে হয়েছে ২৮,৯৮৭।