বিমা করানোর নামে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা। — প্রতীকী ছবি।
সাধারণ মানুষকে ফোন করে বিমা করানোর প্রস্তাব। বাজারচলতি বিমায় চোখধাঁধানো সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন জয় করে বিমা কেনানো। তার পর শুরু প্রতারণার খেলা। জামতাড়া গ্যাংয়ের ঢঙেই লোকঠকানোর কারবার চালাচ্ছিলেন ধৃতেরা, দাবি পুলিশের। বিহারের বেগুসরাইয়ে দিল্লি পুলিশের জালে ছয় ব্যক্তি।
ফোনে নিজেদের ব্যাঙ্কের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এটিএম কার্ড ব্লক হয়ে যাওয়ার সমস্যার কথা বলে বহু মানুষের সমস্ত টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। প্রাথমিক ভাবে মূলত জামতাড়া এলাকা থেকে এই প্রতারণার কারবার পরিচালিত হত। সেই থেকে নাম জামতাড়া গ্যাং। এ বার অনেকটা সেই কায়দাতেই মানুষকে বোকা বানানোর কারবারের পর্দাফাঁস করল দিল্লি পুলিশ। রাজধানীর পুলিশের বিশেষ সেল হানা দেয় বিহারের বেগুসরাইয়ে। সেখান থেকেই হাতেনাতে গ্রেফতার করে ছয় যুবককে। ধৃতদের নাম দীনেশকুমার দাস, বীরেন্দ্র কুমার, বাবলু মালাকার, রৌশন কুমার, পবম কুমার এবং মিথিলেশ কুমার। সকলেই বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা।
সম্প্রতি দিল্লি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, বিমার কিস্তি বাবদ গত ৭-৮ বছর ধরে তিনি ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা জমা করেছেন। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছেন, তাঁর নামে কোনও বিমাই নেই! পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কমপক্ষে ৩৫টি অ্যাকাউন্টে ঘুরপাক খেয়েছে বিমার কিস্তির টাকা। আরও তদন্তে বেরিয়ে আসে, একা ওই ব্যক্তিই নয়, দেশের একাধিক বড় শহরে শতাধিক মানুষের সঙ্গে এ ভাবেই প্রতারণা করা হয়েছে। তাঁদের অনেকেই এখনও জানেনই না, বিমার কিস্তি হিসাবে নির্দিষ্ট মেয়াদে যে অর্থ তাঁরা জমা করে চলেছেন, তা আসলে যাচ্ছে কোথায়।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, দেশের বিভিন্ন বড় শহরে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালানো হয়েছে। প্রতারণা করা হয়েছে ৪০ কোটি টাকারও বেশি। তার পরেই অভিযানে নামে দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্তদের ঠিকানা পাওয়া যায় বেগুসরাইয়ে। সেখানে হানা দিয়ে ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, এই প্রতারণা চক্রে আর কে কে জড়িত রয়েছেন।