শৃঙ্গ ইন্দ্রাসনের ফাইল ছবি
ক্যাম্প থেকে বেরোলেই ধাক্কা খেতে হবে সামনের বিশালাকার পাথুরে দেওয়াল ও সংলগ্ন ফাটল (বার্গস্রুন্ড)। তার পরে রয়েছে ৭০ ডিগ্রি হেলানো একটি বরফঢাকা এলাকা। সেটা পেরোলে ফের খাড়াই দেওয়াল ধরে নেমে পৌঁছনো ভয়ঙ্কর ভাঙাচোরা আইসফলের সামনে। সেই আইসফলের নীচ দিয়ে দিয়ে গিয়ে, তিন-চারটি বিপজ্জনক পাথুরে দেওয়াল টপকে তবেই পৌঁছনো শীর্ষে পৌঁছনোর শৈলশিরার সামনে। এমনই বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে বুধবার সকালে পীর পঞ্জাল হিমালয়ের সবচেয়ে কঠিন শৃঙ্গ ইন্দ্রাসনের (৬২২১ মিটার) শীর্ষে পৌঁছলেন ছয় বাঙালি আরোহী।
ইন্দ্রাসন ও তার পড়শি দেও টিব্বা (৬০০১ মিটার) অভিযানের লক্ষ্যে গত ২৮ মে কলকাতা থেকে হিমাচলের উদ্দেশে রওনা হন সোনারপুরের একটি পর্বতারোহণ ক্লাবের ১১ জনের একটি দল। তাঁদের মধ্যে বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ চার শেরপাকে সঙ্গে নিয়ে শীর্ষে পৌঁছন পর্বতারোহী ও দলনেতা রুদ্রপ্রসাদ হালদার, পার্থসারথি লায়েক, রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, নৈতিক নিলয় নস্কর, দেবাশিস মজুমদার ও শেখ ওমর ফারুক। তবে একটুর জন্য ইন্দ্রাসনের শৃঙ্গ ছোঁয়া অধরা রয়ে গেল সপ্তশৃঙ্গজয়ী পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্তের। সামিটের পৌঁছনোর একটু আগেই ফিরতে হয় তাঁকে। এ দিন বিকেল ৬টা নাগাদ বাকিরাও ফেরেন সামিট ক্যাম্পে।
খামখেয়ালি আবহাওয়ার মধ্যেই ইন্দ্রাসন সামিটের লক্ষ্যে গত রবিবার বেসক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন সাত পর্বতারোহী। সোমবার সারা দিন হেঁটে ক্যাম্প ১ থেকে পৌঁছে যান ৫৭০০ মিটার উচ্চতার ক্যাম্প ৩-এ। পথে একাধিক লুকনো ক্রেভাসে বিপদে পড়েও রক্ষা পান তিন আরোহী। এর পরে মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ শুরু হয় ‘সামিট পুশ’।
১৯৬২ সালে জাপানের একটি দল প্রথম ইন্দ্রাসনের শীর্ষে পৌঁছেছিল। তবে চার শেরপা মিলিয়ে মোট দশ জনের একসঙ্গে ইন্দ্রাসনের সামিট ছোঁয়া এর আগে হয়েছে কি না, মনে করতে পারছেন না রুদ্র। কতটা কঠিন ইন্দ্রাসনের পথ? সামিট ক্যাম্প থেকে রুদ্রের মেসেজ, ‘খুবই কঠিন। প্রতি বাঁকে চমক। একই সঙ্গে খাড়াই পাথর এবং বরফের দেওয়াল চড়তে হয়েছে। তবে শীর্ষ ছুঁতে পেরে সবাই খুব খুশি’।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।