মহিলা অফিসারদের স্থায়ী নিয়োগ শুরু সেনায়। ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৩৯ জন মহিলা অফিসারকে স্থায়ী (পার্মানেন্ট) কমিশনে শামিল করার প্রস্তাব দিয়েছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার সেনার তরফে এ কথা জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর অস্থায়ী (শর্ট সার্ভিস) কমিশনে কর্মরত ৭১ জন মহিলা অফিসার স্থায়ী কমিশনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চ রায় দেয়, ভারতীয় সেনায় যে সব মহিলা অফিসারদের শর্ট সার্ভিস কমিশনে ১৪ বছর চাকরি হয়ে গিয়েছে এবং যাঁরা এখনও চাকরি করছেন, তাঁদের সকলকেই পার্মানেন্ট কমিশনের জন্য বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি, মহিলাদের সেনার কমান্ডিং অফিসার পদের জন্যেও বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে মামলাকারী ৭১ কাজের খতিয়ান বিবেচনা করে ৩৯ জনকে স্থায়ী কমিশনের নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাকি ২৫ জন স্থায়ী কমিশন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচ্য হননি। গত বছর দুই বিচারপতির রায়ে সেনাবাহিনীতে কর্মরত মহিলা অফিসারদের পুরুষদের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। চলতি মাসে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, শর্ট সার্ভিস কমিশনে কর্মরত মহিলা অফিসারদের ছাঁটাই করা চলবে না।
একমাত্র সরাসরি যুদ্ধের শাখা (কমব্যাট উইং) বাদে অন্য শাখাগুলিতে তিন মাসের মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকরের নির্দেশ দেন দুই বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আওতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট ১০ টি ক্ষেত্রে স্থায়ী কমিশনড পদে মহিলা অফিসারদের নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে ছিল আর্মি এয়ার ডিফেন্স, সিগন্যালস, ইনজিনিয়ারিং, আর্মি অ্যাভিয়েশন, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইনজিনিয়ারিং, আর্মি সার্ভিস কোর, আর্মি অর্ডন্যান্স কোর এবং ইনটেলিজেন্স কোর।
ভারতীয় বাহিনীতে চিকিৎসা পরিষেবার বাইরে অন্য ভূমিকায় মহিলাদের নিযুক্তি শুরু হয় ১৯৯২ সালে। কিন্তু পরবর্তী দু’দশক পর্যন্ত স্থায়ী কমিশনড অফিসার কাজ করার সুযোগ মহিলারা পাননি। শর্ট সার্ভিস কমিশনে মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে ১৪ বছর পর্যন্ত কাজের সুযোগ দেওয়া হত মহিলাদের। কিন্তু পুরুষ অফিসারের সরাসরি স্থায়ী কমিশনের যোগদানের পাশাপাশি শর্ট সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমেও স্থায়ী নিয়োগের সুযোগ পেতেন।
দিল্লি হাই কোর্ট মহিলাদের পক্ষে রায় দিলেও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১০ সাল থেকে ২০২০-র ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই আবেদন বিচারাধীন ছিল। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের যুক্তিকে ‘লিঙ্গ বৈষম্যমূলক’ বলে খারিজ করে শীর্ষ আদালত।