প্রতীকী ছবি।
অনেকটাই স্তিমিত হয়েছে করোনাভাইরাসের দাপট। অতিমারির ঝড়ঝাপ্টা সামলে পুরনো ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে গোটা বিশ্ব। এই অবস্থায় আবার অশনি সঙ্কেত বয়ে আনল ওমিক্রনের নয়া উপরূপ। নাম এক্সবিবি।
মহারাষ্ট্রে এই উপরূপে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ ছুঁয়ে ফেলেছে। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। তবে এক্সবিবি উপরূপে আক্রান্তদের অধিকাংশই বাড়িতে নিভৃতবাসে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। হাতে গোনা কয়েক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা চিন্তিত কোভি়ড পরবর্তী উপসর্গ নিয়ে। যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘লং কোভিড’ বলা হয়।
মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, এক্সবিবি উপরূপে আক্রান্ত মোট ৩৬ জনের মধ্যে ৩২ জনই বাড়িতে নিভৃতবাসে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে চার জনের। ৩৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ২২ জন পুরুষ এবং ১৪ জন মহিলা। ১৩ জনের বয়স ২১-৪০ বছরের মধ্যে। ১৪ জন ৪১-৬০ বছর বয়সি। আর সাত জনের বয়স ষাটের উপর। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক প্রদীপ অওয়াতে বলেন, ‘‘ওই ৩৬ জন কোভিড রোগীর মধ্যে ১৯ জনের শরীরে উপসর্গ দেখা গিয়েছে। বাকিরা হয় উপসর্গহীন, নয়তো তাঁদের মৃদু উপসর্গ ছিল। আর কোনও রোগীকেই ভেন্টিলেশনে রাখা হয়নি বা অক্সিজেন সহায়তা দিতে হয়নি।’’
তবে উদ্বেগের কিছু কারণও রয়েছে। ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, দু’জন বাদ দিয়ে বাকি সকলেই কোভিডের দু’টি টিকা নিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, পাঁচ জন বুস্টার টিকাও নিয়েছেন। আর ছ’জন আগেও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্যমহল উদ্বিগ্ন ‘লং কোভিড’ নিয়েও। অর্থাৎ, আগে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠলেও তাঁদের অনেকের শরীরে অন্য রোগ বাসা বেঁধেছে। বুক ধরফড়ানি থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা লাগা সারতে না চাওয়া, ইনহেলার বা অক্সিজেন এখনও নিতে হচ্ছে, মানসিক অবসাদ, হার্টের নানা ধরনের রোগ তাঁদের শরীরে জাঁকিয়ে বসেছে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, করোনা জয়ী হওয়ার পরে যদি শরীরে অন্য রোগের উপসর্গ দেখা দেয়, তবে দ্রুত তার চিকিৎসা করানো জরুরি। সকলকে টিকা নেওয়ার এবং কোভিডবিধি মেনে চলার উপদেশ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, শীঘ্রই কয়েকটি দেশে করোনার আরও একটা ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। ওমিক্রনের নয়া উপরূপ সম্পর্কেও তিনি বলেন, ‘‘ওমিক্রনের বহু উপরূপ রয়েছে। এই মুহূর্তে উদ্বেগ এক্সবিবি উপরূপ নিয়ে। এটি অ্যান্টিবডির কার্যকারিতাকে ছাপিয়ে যেতে পারে। তাই, এই সংক্রমণের জেরে আরও একটা করোনার ঢেউ আমরা দেখতে পারি অদূর ভবিষ্যতে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অতিমারি শেষ হয়ে গিয়েছে, এ কথা বলার এখনও সময় আসেনি। তাই, সমস্ত রকম সাবধানতা মেনে চলা দরকার। একটাই ভাল ব্যাপার যে, আমাদের কাছে টিকা রয়েছে।’’