প্রতীকী ছবি।
রামের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত অযোধ্যার ৩০০ বছরের একটি মন্দিরকে চুরমার করে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একটি নিউজ় পোর্টালের দাবি, তিন শতাব্দী ধরে ভক্তদের পুজো পাওয়া এই মন্দিরটিকে ভেঙেছে সঙ্ঘ পরিবারের নিয়ন্ত্রিত শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টই। কারণ তাদের যুক্তি, নতুন মন্দিরের যে নকশা করা হয়েছে, সেটায় ঢোকার রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে ছিল এই পুরনো মন্দিরটি। গত ২৭ অগস্ট তাই পুরনো মন্দিরটিকে ভেঙে ফেলা হয়েছে।
রামের জন্মস্থান হিসেবে কথিত অযোধ্যায় রামের অনেক মন্দিরই রয়েছে। তার মধ্যে এই মন্দিরটি জমি কিনে হিন্দু ভক্তদের জন্য তৈরি করে দিয়েছিলেন স্থানীয় এক মুসলিম জমিদার। সেই অর্থে ৩১৯ বছর আগে নির্মিত এই মন্দিরটি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার একটি প্রতীকও।
বাবরি মসজিদের ঠিক পিছনে একটি রাস্তার ওপারে ছিল এই পুরনো রামমন্দিরটি। তৎকালীন অযোধ্যার নবাবের প্রশাসন ব্রিটিশ সেটলমেন্ট অফিসার পি কার্নেগির লেখা ‘অযোধ্যার ইতিহাস’ প্রকাশ করেছিল ১৮৭০ সালে। কার্নেগি এটি লেখেন ১৮৬৭-৬৮ সালে। সেখানে এই পুরনো রামমন্দিরটির বর্ণনা রয়েছে। বলা হয়েছে, ‘১৬৬ বছর আগে মোহন্ত রামদাস এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। যে এক একর উপরে মন্দিরটি নির্মিত, সেটি দান করেছিলেন স্থানীয় জমিদার মির মাসুম আলি।’ এখানে তখন যে ২২ জন সাধু থাকতেন, সে কথা উল্লেখ করে কার্নেগি জানিয়েছিলেন ‘এই রামকোট এলাকার সব চেয়ে সমৃদ্ধ মন্দিরের একটা এই রামমন্দির।’
আরও পড়ুন: মাদক-বিতর্কে সম্পাদকের ছেলে, অস্বস্তিতে কেরল-সিপিএম
তবে পরে মোহন্তরা বাবরি মসজিদের গর্ভগৃহে রামের মূর্তি বসিয়ে দেওয়ার পরে সেটিই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। ১৯৮৪ থেকে প্রশাসনিক ভাবে এই মন্দিরটির প্রভাব খর্ব করার চেষ্টা শুরু হয়। সে বছর মন্দিরটির এক তলায় একটি পোস্ট অফিস খোলা হয়। তার পরে ১৯৯১-তে পুজোর জায়গাটুকুকে ছাড় দিয়ে মন্দিরটিকে পুলিশের চৌকি বানানো হয়। ১৯৯২-তে করসেবকদের ঠেকাতে যে বিরাট পুলিশ বাহিনী অযোধ্যায় মোতায়েন হয়েছিল, তার কন্ট্রোল রুম করা হয় এখানে। এ বার সেই মন্দিরটিকে ভেঙেই ফেলা হল বলে জানা গিয়েছে। সেখান দিয়ে হবে নতুন মন্দিরের যাবার রাস্তা।