প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র কারণে কলকাতা বিমানবন্দর বন্ধ রাখার কথা বুধবারই ঘোষণা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনও বিমান ওঠানামা করবে না বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু কলকাতা বিমানবন্দরই নয়, ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ১৬ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতিল করা হচ্ছে প্রায় ৫৫০টি ট্রেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিবৃতি উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। যাত্রীদের যাতে কোনও রকম সমস্যার মুখে পড়তে না হয়, তাই আগেভাগেই বিমান বাতিলের কথা ঘোষণা করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কলকাতা থেকে প্রতি দিন গড়ে ৪০০ বিমান ওঠানামা করে। ভুবনেশ্বর থেকে ১০০ বিমান ওঠানামা করে প্রতি দিন। ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র জেরে বিপুল সংখ্যক বিমান বাতিল হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রী হয়রানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিষেবা এবং যাত্রী হয়রানির বিষয়টি ভেবেই বিবৃতি জারি করে এক দিন আগেই বিমান বাতিলের কথা ঘোষণা করেছেন।
শুধু বিমানই নয়, রেল পরিষেবাতেও প্রভাব ফেলছে ‘ডেনা’। ইতিমধ্যেই ৫৫২টিরও বেশি এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেল বাতিল করেছে ১৫০টি ট্রেন। ইস্টকোস্ট রেল বাতিল করেছে ১৯৮টি। পূর্ব রেল ২০০টিরও বেশি এবং দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য রেল বাতিল করেছে ১৪টি ট্রেন।
ইস্টকোস্ট রেল যে ট্রেনগুলি বাতিল করেছে তার মধ্যে রয়েছে হাওড়া-সেকেন্দরাবাদ, শালিমার-পুরী, কামাখ্যা-বেঙ্গালুরু, নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর, খড়্গপুর-ভিল্লুপুরম, হাওড়া-ভুবনেশ্বর, শালিমার-হায়দরাবাদ, হাওড়া-পুরী-সহ আরও অনেক ট্রেন। পূর্ব রেল যে এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি বাতিল করেছে তার মধ্যে রয়েছে, পটনা-এর্নাকুলাম এক্সপ্রেস, কলকাতা-পুরী, পুরী-কলকাতা, ডিব্রুগড়-কন্যাকুমারী, বেঙ্গালুরু-গুয়াহাটি-সহ আরও অনেক ট্রেন।
হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে বাতিল করা হয়েছে প্রচুর লোকাল ট্রেনও। শিয়ালদহ দক্ষিণ ও হাসনাবাদ শাখায় মোট ১৯০টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৪ ঘণ্টা শিয়ালদহ দক্ষিণ এবং হাসনাবাদ শাখায় বন্ধ থাকবে ট্রেন চলাচল। হাওড়া স্টেশন থেকেও শুক্রবার বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বর্ধমান, ব্যান্ডেল, শেওড়াফুলি এবং শ্রীরামপুর লোকালও। অন্য দিকে, ব্যান্ডেল থেকে কাটোয়ার দিকেও কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
শক্তি বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার উপকূলের দিকে আরও এগিয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা মাঝে আছড়ে পড়তে পারে সেটি। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০-১১০ কিলোমিটার। সর্বাধিক হবে ১২০ কিলোমিটার।