প্রতীকী ছবি।
দেশের শিক্ষার উপরে অতিমারির প্রভাব ফুটে উঠল ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট সার্ভেতেও। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৮ শতাংশ পড়ুয়া অনলাইনে পড়াশোনা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে। ৮০ শতাংশ পড়ুয়া জানিয়েছে, স্কুলে গিয়ে তারা অনেক ভাল ভাবে যে কোনও বিষয় শিখতে পারে। ২৪ শতাংশ পড়ুয়া অনলাইনে পড়াশোনার জন্য স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার পায়নি। দেশের মোট ৩৪ লক্ষ পড়ুয়ার উপরে এই সমীক্ষা হয়েছে। তৃতীয়, পঞ্চম, অষ্টম এবং দশম শ্রেণির পড়ুয়ারাই এই সমীক্ষায় যোগদান করতে পেরেছে। পডুয়াদের পাশাপাশি দেশের প্রায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার স্কুলের প্রায় পাঁচ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকার উপরেও সমীক্ষাচালানো হয়েছে।
পড়ুয়ারা যে অতিমারি পরিস্থিতিতে অনলাইনে পড়াশোনা সে ভাবে করতে পারেনি তা সমীক্ষা রিপোর্ট থেকেই উঠে এসেছে। ভাষা, অঙ্ক, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, পরিবেশবিদ্যায় পড়ুয়াদের ‘পারফরম্যান্স’ আগের সমীক্ষা (২০১৭-১৮) থেকে কমেছে। মোট ৫০০ নম্বরের বিচারে দেখা গিয়েছে, তৃতীয় শ্রেণিতে ভাষা, অঙ্ক এবং পরিবেশবিদ্যায় পড়ুয়াদের জাতীয় গড় যথাক্রমে ৩২৩, ৩০৬, ৩০৭। পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের এই তিনটি বিষয়ে পারফরম্যান্সের গড় ৩০৯, ২৮৪, ২৮৩। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের ভাষা, অঙ্ক, বিজ্ঞান এবং সমাজ বিজ্ঞানে গড় যথাক্রমে ৩০২, ২৫৫, ২৫০, ২৫৫। দশম শ্রেণিতে আধুনিক ভারতীয় ভাষা, অঙ্ক, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান এবং ইংরেজিতে গড় পারফরম্যান্স যথাক্রমে ২৬০, ২২০, ২০৬, ২৩১, ২৭৭।
পারফরম্যান্সের গড় বিচার করলে দেখা যায়, সামগ্রিক ভাবে অঙ্ক এবং বিজ্ঞানে পড়ুয়াদের পারফরম্যান্স খারাপ। তুলনামূলক ভাবে উঁচু ক্লাসে অঙ্ক এবং বিজ্ঞানের পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে। তা থেকেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, স্কুল পড়ুয়ারা কি অঙ্ক এবং বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ছেন? তাঁদের পর্যবেক্ষণ, অনলাইনে ভাষা শেখা তুলনামূলক ভাবে সহজ হলেও অঙ্ক এবং বিজ্ঞানের মতো বিষয় স্কুলে না গিয়ে সে ভাবে শিখতে পারেনি পড়ুয়ারা। প্রসঙ্গত, রিপোর্টে এও উঠে এসেছে যে অতিমারি পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন স্কুল এবং ক্লাসঘর থেকে দূরে থাকার পরেও ৯৬ শতাংশ পড়ুয়ারা স্কুলে যেতে চায়।
পারফরম্যান্সের বাইরেও কয়েকটি জিনিস এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ২২ শতাংশ পড়ুয়া বাড়িতে যে ভাষায় কথা বলে তার সঙ্গে স্কুলের পড়াশোনার ভাষার মিল নেই। ৯৪ শতাংশ পড়ুয়া জানিয়েছে যে তারা স্কুলে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। স্কুলপড়ুয়াদের মায়েরাও সমীক্ষার অন্তর্গত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ১৮ শতাংশ মা নিরক্ষর এবং ১২ শতাংশ মায়ের স্নাতক বা তার বেশি ডিগ্রি আছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।