—প্রতীকী চিত্র।
আবার পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনা রাজস্থানের কোটায়। এ বার একই দিনে দুই পড়ুয়া আত্মহত্যা করলেন। চলতি বছরে এই নিয়ে মোট ২৪ জন পড়ুয়ার মৃত্যু হল কোটায়। রবিবার এক জনের ঝুলন্ত দেহ মেলে হস্টেলের ঘরে। অন্য জন, একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের ছ’তলা থেকে ঝাঁপ দেন। এই প্রেক্ষিতে কোটার জেলাশাসক ওমপ্রকাশ বুনকার কোচিং প্রতিষ্ঠানগুলিকে এক মাসের জন্য পরীক্ষা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী, বিজ্ঞপ্তিও জারি হয় বলে খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে কোটার কোচিংসেন্টারের ছ’তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিজেকে শেষ করে দেন আবিষ্কার শুভাঙ্গি নামে এক ছাত্র। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা আবিষ্কার কোটায় দাদু-দিদিমার সঙ্গে থাকতেন। ওই দিন বিকেলে হস্টেলে নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় বিহারের বাসিন্দা আদর্শকে। পুলিশ জানিয়েছে, আবিষ্কার এবং আদর্শ দু’জনেই ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (নিট)-এর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এই নিয়ে ডেপুটি পুলিশ সুপার ধরমবীর সিংহ বলেন, “আবিষ্কার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। পাশাপাশি তিনি কোটায় নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রবিবার তাঁর একটি পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রের ছ’তলা থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা।”
গত ১৫ অগস্ট বিহারের গয়ার বাসিন্দা বাল্মিকী জাঙ্গিদ নামে ১৮ বছরের এক পড়ুয়ার দেহ মেলে কোটার একটি হস্টেলে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের চূড়ান্ত পরীক্ষায় সফল হতে বাল্মীকি কোটায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন।
পুলিশের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে কোটায় ছাত্রমৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৫। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ২০, ২০১৭ তে ছিল সাত, ২০১৬ সালে ১৭ এবং ২০১৫ তে ১৮ জন। চলতি বছরের অষ্টম মাসে সেই সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২৪ ছুঁয়েছে।
রাজস্থানের কোটায় পড়ুয়ামৃত্যু রুখতে স্প্রিং দেওয়া পাখা লাগানোর নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসকের তরফে প্রকাশিত একটি নির্দেশিকায় কোটা শহরের সমস্ত হস্টেল এবং হোটেল কর্তৃপক্ষকে যত শীঘ্র সম্ভব এই পাখা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। রবিবারের মধ্যে সমস্ত হস্টেলের বারান্দায় জাল লাগানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরও রোখা গেল না পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনা।
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য পেতে কোটার বিকল্প নেই, এমনটাই মনে করেন বহু অভিভাবক। তাই সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় তাদের প্রতি বছর কোটায় পড়তে পাঠান বহু বাবা-মা। যদিও বহু বার অভিযোগ উঠেছে যে, কোটায় পড়ুয়াদের উপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করে কোচিংসেন্টারগুলি।