ফাইল চিত্র।
মাস কয়েক আগেই প্রায় একশোটি রুটের দেড়শোটি ট্রেন বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল। কিন্তু কোনও বেসরকারি সংস্থা আগ্রহ না দেখানোয়, সেই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। তা সত্ত্বেও আজ ফের দেড়শো ট্রেন বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কথা জানালেন রেলমন্ত্রী অশ্বীন বৈষ্ণো। ‘ভারত গৌরব’ নামে ওই ট্রেনগুলি নির্দিষ্ট পর্যটন সার্কিটে চালানো হবে।
অতীতে রেল ‘মহারাজ এক্সপ্রেস’ চালিয়েছিল পর্যটকদের কথা মনে রেখে। যাত্রীর অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। একই কারণে বন্ধ হয়েছে দেশের ব্যাঘ্র প্রকল্পগুলিকে সংযুক্তকারী পর্যটন ট্রেনও। তা সত্ত্বেও ১৫০টি ট্রেনকে এ বার বেসরকারি পর্যটন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। আজ রেলমন্ত্রীর দাবি, অন্তত ১৫টি সংস্থা ওই ট্রেন চালাতে আগ্রহী। তবে কোন কোন রুটে, কোন সংস্থা ট্রেন চালাবে তা এখনও স্থির হয়নি। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিভিন্ন ধর্মস্থান, জঙ্গলভিত্তিক সাইটগুলিতে অনেকে ট্রেন চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। অনেকে যেমন গুরু নানক তথা শিখ সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন স্থানগুলির মধ্যে ট্রেন চালাতে ইচ্ছুক। প্রস্তাব এসেছে, ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে এমন স্থানকে যুক্ত করে ট্রেন চালানোর। কেউ ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, জগন্নাথ ধামের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন তীর্থক্ষেত্রগুলিকে জুড়ে ‘ভারত গৌরব’ ট্রেন চালানোরও। মধ্য ও উত্তর ভারতের ব্যাঘ্র প্রকল্পকে ট্রেনের সঙ্গে জুড়তে চায় অনেকে।’’ প্রতিটি ট্রেনে গড়ে ১৬টি করে কামরা থাকবে। তাতে থাকবে বাতানুকূল ও
স্লিপার-উভয় শ্রেণি।
তবে ওই ট্রেনের ভাড়া কত হবে, তা ট্রেন লিজ নেওয়া বেসরকারি সংস্থাই ঠিক করবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তাঁর আশ্বাস, কোনও সংস্থা যাতে অস্বাভাবিক ভাড়া না নিতে পারে সে দিকে নজর থাকবে। ওই প্রকল্প থেকে রেলের কেমন আয় হবে সেই প্রশ্নের অবশ্য জবাব দেননি রেলমন্ত্রী। অশ্বীন বলেন, ‘‘রেলের ঘরে সামান্যই অর্থ আসবে। সরকারের আসল লক্ষ্য হল পর্যটনকে উৎসাহ দেওয়া।’’ রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, পর্যটন ট্রেনগুলিতে পুরনো কামরা ব্যবহার হবে। একটি সূত্রের দাবি, অধিকাংশ ট্রেনেই এলএইচবি কামরা ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। ফলে পুরনো ধাঁচের বহু কামরা ধীরে ধীরে বসিয়ে দিতে হচ্ছে। অথচ সেগুলির আয়ু এখনও বেশ কয়েক বছর রয়েছে। তা-ই ওই কামরাগুলিকেই নতুন করে সাজিয়ে পর্যটন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রেলের যে পরিকাঠামো ব্যবহার করা হচ্ছে মূলত তার দাম দিতে হবে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে। এ যাবৎ বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে ট্রেন চালানোর যে ক’টি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সব ক’টি মুখ থুবড়ে পড়েছে। করোনার কারণে এক দিকে আর্থিক বৃদ্ধির সূচক নিম্নগামী, অন্য দিকে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা— সেই আবহে পর্যটনমুখী রেলের ওই প্রকল্পে কতটা সাফল্য মিলবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।