হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার। ছবি: সংগৃহীত।
অসম বন দফতর এবং বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি (বিএনএইচএস)-র মুক্ত প্রকৃতিতে পুনর্বাসন পেল সংকটাপন্ন ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’ প্রজাতির ১৫টি শকুন। সোমবার দক্ষিণ কামরূপ জেলার রানি বেলগুড়ি সংরক্ষিত অরণ্যে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।
আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্পের অন্তর্গত রাজাভাতখাওয়া শকুন প্রজনন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের আধিকারিক সচিন রানাডে জানিয়েছেন, মার্চ মাসে কামরূপ জেলার লোহারঘাট বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ওই অপ্রাপ্তবয়স্ক শকুনগুলি। বন দফতরের সহায়তার তাঁদের উদ্ধার করে বেলগুড়ি শকুন সংরক্ষণ কেন্দ্রে এনে চিকিৎসা শুরু হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার ফলে ধীরে ধীরে সবক’টি ‘হিমালয়ান গ্রিফন’ সুস্থ হয়ে ওঠে।
সচিন বলেন, ‘‘উন্মুক্ত প্রকৃতিতে পুনর্বাসনের আগে প্রতিটি শকুনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা ছাড়পত্র দেওয়ার পরেই তাদের মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, এই প্রজাতির শকুনগুলির প্রজননক্ষেত্রে হিমালয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকা। প্রতি বছরই শীতের গোড়ায়, নভেম্বর মাসে তারা তরাই অঞ্চলে নেমে আসে। এপ্রিলে পরিযায়ী হয়ে চলে যায় পাহাড়ে।
লোহারঘাট এলাকায় সম্প্রতি পথকুকুরদের তাণ্ডব বেড়েছে। তাদের মারার উদ্দেশ্যেই কোনও গ্রামবাসী মৃত পশুর মাংসে বিষ দিয়েছিল বলে রানাডে-সহ বিএনএইচএস-এর বিজ্ঞানীদের অনুমান। রানাডে জানিয়েছেন, মারণ ওষুধ ডাইক্লোফেনাকের ব্যবহারের কারণে দু’দশকে ভারতে শকুনের সংখ্যা ৯০ শতাংশেরও বেশি কমে গিয়েছে। হোয়াইট ব্যাক্ড, স্লেন্ডার বিল্ড, লং বিল্ড প্রজাতির শকুন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমেছে হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতিও।
আইনগত ভাবে গবাদি পশুর দেহে ব্যথা উপশমের ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও লুকিয়ে তা ব্যবহার হয় বলে পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেরই অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বিএনএইচএস-এর উদ্যোগে রাজাভাতখাওয়া-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শকুন প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তাদের বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।