বিতর্কিত মন্তব্য ওয়ারিস পাঠানের। ছবি: টুইটারের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া
আসাদউদ্দিন ওয়াইসির উপস্থিতিতে প্রকাশ্য মঞ্চে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ায় গ্রেফতার হয়েছেন কর্নাটকের তরুণী অমূল্য। সেই বিতর্কের মধ্যেই সামনে এল কয়েকদিন আগেকার আরও একটি ভিডিয়ো, যাতে প্রকাশ্যে জাতি-হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিধায়ক ওয়ারিস পাঠানের বিরুদ্ধে। উল্লেখযোগ্য ভাবে ওয়ারিস পাঠানের ওই ভাষণের সময়ও মঞ্চে ছিলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এবং ওই ঘটনাও কর্নাটকেই হয়েছিল। ওয়ারিস ওই দিন বলেছিলেন, ‘‘১৫ কোটি মুসলমানই ১০০ কোটি হিন্দুকে দমিয়ে রাখতে পারে।’’ স্বাভাবিক ভাবেই আরও অস্বস্তিতে পড়েছেন ওয়াইসি।
শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের সাংসদ তথা মিম সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ওই মঞ্চেই অমূল্য নামে এক তরুণী মাইক নিয়ে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত আসাদউদ্দিন-সহ অন্যান্যরা তাঁকে বাধা দেন। মঞ্চ থেকেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর থেকেই ওয়াইসি এবং তাঁর দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে বিজেপি। তার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়েছে ওয়ারিস পাঠানের ওই ভিডিয়ো। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার কর্নাটকের গুলবর্গায় সিএএ বিরোধী মঞ্চে ওয়ারিস বলেন, ‘‘মনে রাখবেন আজাদি কেউ না দিলে ছিনিয়ে নিতে হয়। আমাদের আজাদি চাই। তাই এক জোট হতে হবে।’’
আরও পড়ুন: আসাদউদ্দিনের সামনে সিএএ বিরোধী মঞ্চে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান, গ্রেফতার তরুণী
শাহিন বাগে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে সিএএ-বিরোধী অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন মহিলারা। তা নিয়ে বিজেপির একাংশ অভিযোগ তুলেছে, মহিলাদের ঢাল করে আন্দোলন করা হচ্ছে। সেই প্রসঙ্গেই ওই দিন ১৫ কোটি মুসলিম আর ১০০ কোটি হিন্দুর তত্ত্ব এনেছিলেন ওয়ারিস। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বলছেন, আমরা মহিলাদের সামনে রেখেছি, তাঁদের বলতে চাই, শুধু সিংহীরা বেরিয়েছে, আর আপনারা ঘামছেন। বুঝতে পারছেন, আমরা সবাই বেরোলে কী হবে?’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘হাম ১৫ কড়োর হ্যায়, লেকিন ইয়াদ রাখিয়ে, ১৫ কড়োর হ্যায়, লেকিন ১০০ কড়োর কে উপর ভারী হ্যায়।’’ অর্থাৎ ১৫ কোটি মুসলিম জনসংখ্যাই যে ১০০ কোটি হিন্দুদের দমিয়ে রাখতে পারে বা শাসন করতে পারে, সেটাই বলতে চেয়েছিলেন ওয়ারিস পাঠান।
ওয়ারিস পাঠানের সেই বিতর্কিত ভাষণ:
আরও পড়ুন: ‘মুসলিমদের পাকিস্তানে পাঠানো উচিত ছিল’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য গিরিরাজের
ওই মহিলা ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলার সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েইসি চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে তাঁকে বাধা দেন। এই ধরনের স্লোগান যে অনুচিত, সেটাও বোঝানোর চেষ্টা করেন। দলের সঙ্গে যে অমূল্যর কোনও সংস্পর্শ নেই, সে কথাও পরে বলেছেন হায়দরাবাদের সাংসদ। কিন্তু তাতেও তাঁর অস্বস্তি কমেনি। মিম নেতাকে তীব্র আক্রমণ ও নিন্দা শুরু করেছে বিজেপি। তার সঙ্গে ওয়ারিস পাঠানের এই ভিডিয়ো ওয়াইসির অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।