ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন।—ছবি এপি।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকে মোট ১৪৪ জন নাবালককে আটক করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের নাবালক বিচার কমিটি। আজ শীর্ষ আদালতে এক রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, আটকদের মধ্যে ১৪২ জনকেই পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্য দিকে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাষ্ট্রপুঞ্জে মিথ্যে বিবৃতি দিয়েছেন বলে ফের দাবি করল ভারত। এ দিন জম্মু-কাশ্মীর সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জে ‘মিথ্যে কাহিনি’ শুনিয়েছেন ইমরান।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে সেখানে বহু নাবালককে বেআইনি ভাবে আটক করা হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা এক আর্জিতে জানান দুই শিশু অধিকার কর্মী। তার প্রেক্ষিতেই জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের নাবালক বিচার কমিটিকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আজ এক রিপোর্টে কমিটি জানিয়েছে, বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকে ১৪৪ জন নাবালককে আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৪২ জনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি ও নিম্ন আদালতের কাছ থেকে এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে কমিটি। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি জানান, আর্জিতে পেশ করা তথ্য মনগড়া। যে সব নাবালক আইন ভেঙেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
কমিটি রিপোর্টে জানিয়েছে, শ্রীনগরের হারওয়ান ও জম্মুর আর এস পোরায় নাবালকদের জন্য দু’টি হোম রয়েছে। ৫ অগস্ট থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে হারওয়ানের হোমে মোট ৩৬ জন নাবালককে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ২১ জন জামিন পেয়েছে। আর এস পোরার হোমে ওই সময়কালে আনা হয়েছিল ১০ জনকে। তাদের মধ্যে ৬ জন জামিন পেয়েছে।
এরই মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ইমরানের দাবির বিরুদ্ধে ফের সরব হল ভারত। কেন্দ্রের পরে আজ জম্মু-কাশ্মীর সরকারের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়, নানা এলাকায় জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তান। সে দিক থেকে নজর ঘোরানোর জন্য ইমরান মিথ্যে কাহিনি শুনিয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীরে আদৌ সার্বিক নিষেধাজ্ঞা নেই। যাতে দুষ্কৃতীরা গোলমাল পাকাতে না পারে সে জন্য কিছু এলাকায় যাতায়াতে সীমিত নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। খুব কম সময়ের মধ্যেই তা তুলে নেওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীর সরকারের দাবি, রাজ্যে এখন স্থানীয় বাসিন্দা, সাংবাদিক-সহ সকলেরই যাতায়াতের অবাধ অধিকার আছে। স্বাভাবিক রয়েছে জম্মু-শ্রীনগর সড়ক ও বিমান চলাচল। হাসপাতাল খোলা রয়েছে। চালু আছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ। সরকারের দাবি, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমের অন্তত ২০০ জন সাংবাদিক বর্তমানে কাশ্মীরে কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সরকারের সমালোচক। কিন্তু তাঁরা সকলেই স্বাধীন ভাবে কাজ করছেন।